বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ঈদের পরে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াবে এমনটাই আভাস পাওয়া গিয়েছিল ঈদের পূর্ববর্তী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠানগুলোতে। ঈদের পর পরই আগামি জাতীয় সাংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান দুটি বড় দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মাঠে নামার ঘোষনা দিয়েছিল। এমনকি বিএনপি ও তার শরিক দলগুলো সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নামার ঘোষণার হুমকি দিয়েছে। অন্যদিকে সরকারি দল নারায়ণগঞ্জবাসীর যানমালের নিরাপত্তাসহ অরাজকতা প্রতিরোধে মাঠে থাকারও ঘোষনা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সাংসদ একেএম শামীম ওসমানও এ ইস্যুতে খুলেছেন মুখ। বলেছেন, মাঠে নামুক না, মাঠে আওয়ামী লীগ আছে, মানুষ আছে। মাঠের খেলা মাঠেই হবে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মাঠে আন্দোলন-সহিংসতা না হলেও কিছুটা উত্তাপ ছড়াবে এমনটাই আভাস দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর অনেকটা নীরব ভূমিকায় সময় পার করেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। সম্প্রতি তারা আন্দোলনে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন নিজেই আন্দোলনের এ ঘোষণা দেন। ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার আহ্বানে সাড়া না দিলে দেশে তুমুল যুদ্ধের পদধ্বনি শোনা যাবে। কেন্দ্রীয় নেতার এমন ঘোষনার পর কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে সকল ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগও আন্দোলনের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি কতটুকু সফল হতে পারে তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। আর এ আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জবাসীকে কতখানি সম্পৃক্ত করতে পারবে, সেটা দেখার বিষয়। কেননা, জেলা বিএনপির নিজেরাই কোন্দলে জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের সচেতনমহল মনে করেন, জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো আন্দোলনই বেগবান করা যায় না। তবে যেহেতু কেন্দ্রীয় বিএনপি আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েছে এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নামবে এটাই স্বাভাবিক। আর বিএনপি রাজপথে আন্দোলনের জন্য নামলে কিছু না হলেও কথার উত্তাপ ছড়াবে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপি সূত্র থেকে জানা যায়, ঈদের পর পরই নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতেই কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালনে মাঠে নামবে তারা। তবে এ আন্দোলন কতটা বেগবান হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেই। এরই মধ্যে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য জেলা ও মহানগর বিএনপি কমিটি করলেও সে কমিটি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভেদ। অনেকবার চেষ্টা করেও বিভেদ মেটানো সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে যাওয়ার মতো প্রস্তুত হতে পারেনি বিএনপি এমনটাই মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। সূত্রটি আরও জানায়, দলের যে অবস্থাই থাক, আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টা করবে দলটি। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলেন, বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এছাড়া এ মুহূর্তে আর কোনো উপায় ছিল না। কারণ কোনো কর্মসূচি না থাকায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছে। এ কারণে আন্দোলনের নামে কিছু কর্মসূচি থাকলে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত থাকবে। এছাড়া এ আন্দোলনের ঘোষণার মাধ্যমে নেতাকর্মীদের শক্তির মাঠ পর্যায়ের অবস্থানও বোঝা যাবে।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপির আন্দোলনের হুমকিকে তোয়াক্কা না করার কথা বলা হলেও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। ঈদের পর পরই মাঠ দখলে রাখতে তাই আসছে মাসব্যাপী কর্মসূচি। বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে রাজপথ দখলে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। বিএনপি যাতে আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, এজন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হবে।