বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ফতুল্লার তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী পিচ্চি মিজান এবং সৈনিকলীগ নেতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জসীম নামের দুই সন্ত্রাসীকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তাদের শেল্টার দাতারা। এমনকি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে পুলিশকে সহযোগিতা করা স্থাণীয় এলাকাবাসীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি প্রদান করাসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। ফতুল্লার মানদাইর গাবতলী এলাকার ঝুট সন্ত্রাসী গাফ্ফারসহ তার সহযোগীরা এই অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী পিচ্চি মিজান এবং জসীমকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও তার শেল্টার দাতা অপর সন্ত্রাসী গাফ্ফারকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন স্থাণীয় এলাকাবাসী।
সূত্রে জানা যায়, শিল্পাঞ্চল এলাকা হিসেবে ইতিমধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছে ফতুল্লার মাসদাইর এবং গাবতলী এলাকাটি। এ এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। আর শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঝুট ও ওয়েষ্টিজ সেক্টর দখল করার জন্য একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ মাঠে সক্রিয় রয়েছে। এলাকার ঝুট সেক্টর দখল করাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী গাফ্ফার বাহিনীর সাথে প্রায় সময়েই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে প্রতিপক্ষের লোকজনদের সাথে। আর এ সংঘর্ষের ফলে শান্তিপ্রিয় এলাকার শান্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ফতুল্লার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি অনেকটাই অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ একাধিকবার গাফ্ফারসহ তার বাহিনীদের সদস্যদের গ্রেফতার করছে। আইনের ফাক ফোকর পেরিয়ে জামিনে বের হওয়ার পর আবারো শুরু হয় এই দুই বাহিনীর সংঘর্ষ। গত বুধবার রাতে ঝুট সন্ত্রাসী গাফ্ফার বাহিনীর অণ্যতম সদস্য ফতুল্লা থানার তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী পিচ্চি মিজান এবং জসীমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রতিপক্ষ ঝুট সন্ত্রাসী বড় মিজানের লোকজন গাফ্ফার বাহিনীর সদস্যদের ধরিয়ে দিয়েছে এমন সন্দেহে সন্ত্রাসী গাফ্ফারসহ তার বাহিনীর সদস্য ঝিকু হত্যা মামলার অণ্যতম আসামি লাট মিয়ার ছেলে খাঁজা, আমির, পিচ্চি মিজানের খালাতো ভাই আশরাফ, মাসদাইরের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ক্রসফায়ারে নিহত টাওয়ার সেলিমের চাচাতো ভাই রাশেদ, মাদক ব্যবসায়ী সাহার ছেলে হীরা এবং রাসেলসহ একদল সন্ত্রাসী বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জে সজ্জিত হয়ে বড় মিজান বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকা প্রদক্ষিত করে। গাফ্ফার বাহিনীর এমন মহড়ায় ভীতসস্ত্র হয়ে পড়ে আশে পাশে থাকা লোকজন। গাফ্ফার বাহিনীর সন্ত্রাসীদের মহড়ার খবরে ঝুট সন্ত্রাসী বড় মিজানের লোকজনও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে মাসদাইর এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন গার্মেন্টের সামনে অবস্থান নিয়েছে। এই দুই গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থানের ফলে আতংকের মধ্যে দিনযাপন করছে শান্তিপ্রিয় মানুষ। এমনকি আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটার আগেই মাসদাইরের ঝুট সন্ত্রাসী বড় মিজান এবং গাফ্ফারসহ তাদের বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। অপরদিকে মাসদাইরের ঝুট সন্ত্রাসীদের মাথার উপর ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের ছত্র ছায়ায় লালিত পালিত হওয়ার কারনে অনেকটাই বীরদর্পেই প্রকাশ্যেই এ ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিন জানান, ফতুল্লায় ওসি হিসেবে যোগদানের পর থেকে কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হয়নি’ হউক সে যত বড়ই প্রভাবশালী ব্যাক্তি। বিশেষ অভিযান চলছে, আর এ অভিযানে তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পিচ্চি মিজান এবং জসীম নামের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফতুল্লার মানুষের শান্তি বিঘœ করার জন্য বড় মিজান আর গাফ্ফার কোন দলের লোক তা আমার জানার দরকার নেই। কারন, অপরাধীদের কোন দল থাকতে পারে না। অচিরেই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে মাসদাইর ও গাবতলী এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষকে আশ্বস্থ করেছেন।
মাসদাইর এলাকার স্কুল শিক্ষক লিয়াকত মিয়া জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমের বদৌলতে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিনের সফলতার বিষয়ে জানতে পেরেছি। ওসি কামাল উদ্দিন ফতুল্ল থানায় যোগদানের পর থেকে মাদক,সন্ত্রাস,মানব পাচারকারী এমনকি সাধারন সেবাপ্রার্থীরা তাদের কাংখিত সেবা কোন ধরনের হয়রানী ছাড়াই পাচ্ছেন। আর দেড় বছরের মাঝামাঝি সময়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিনের মতো অণ্য কোন ওসি অতীতে চাকুরি কলাকালীন সময়ে এতটা সফলতা অর্জন করতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ওসি কামাল উদ্দিন পুলিশের ভাবমূতি রক্ষার্থে একটা উজ্জল দৃষ্টান্ত। আর তার মতো এমন একজন বিচক্ষন ওসি থাকাকালে গত কয়েকদিন ধরে মাসদাইর গাবতলী এলাকায় ঝুট সন্ত্রাসীদের মহড়া প্রদান অনাকাংখিত। সন্ত্রাসীদের অব্যাহত মহড়ায় আমাদের মত শান্তিপ্রিয় মানুষ আতংকের মধ্যে আছি। তাই অনতিবিলম্বে ঝুট সন্ত্রাসী বড় মিজান এবং গাফ্ফারসহ তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন এমনটাই প্রত্যাশা।