বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
শিশুদের নিয়ে আয়োজিত কোন অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান অতিথি হয়ে যাওয়া মানেই অনুষ্ঠানের গতানুগতিক নিয়ম ভেঙ্গে ভিন্ন কিছু হওয়া। তাই বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্বর্নপদক আবৃতি, সঙ্গীত ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানেও নিয়ম ভেঙ্গে নতুন কিছু করে দেখিয়েছেন এমপি সেলিম ওসমান।
বৃহস্পতিবার ১০মে বিকেল সাড়ে ৪টায় নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের আয়োজনে ক্লাব প্রাঙ্গনে উক্ত পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক রাব্বি মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খালেদ হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) হোসনে আরা বীনা।
অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিতে আসা প্রতিযোগী প্রথম শ্রেণী শিক্ষার্থী শিশু হামিমকে মঞ্চের ডায়াসে তুলে উপস্থিত সবার সাথে তাকে দেশের ভবিষ্যত বঙ্গবন্ধু বলে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। আর না দিয়েই বা উপায় কি!
এর আগে নিজের বক্তব্যে প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে দুইজনকে মঞ্চে আসার আহবান করেন এমপি সেলিম ওসমান। প্রথমেই মঞ্চে আসে শিশু হামিম। সেলিম ওসমান তার কাছে প্রতিযোগীতায় করা আবৃতিটি পুনরায় করতে বলেন। হামিমের আবৃতি শুনে মুগ্ধ হয়ে এমপি সেলিম ওসমান তাকে পুরস্কার দেওয়া কথা বলে পছন্দ মত পুরস্কার চাইতে বলেন। পরিপ্রেক্ষিতে হামিম সেলিম ওসমানের কাছে ‘বঙ্গবন্ধু’কেই পুরস্কার হিসেবে চেয়ে বসে। হামিমের এমন চাওয়ায় বেকায়দায় পড়ে যান এমপি সেলিম ওসমান। তখন সেলিম ওসমান হামিমকে বলেন বঙ্গবন্ধুকে আমি কোথা থেকে এনে দিবো তুমি অন্য কিছু চাও।
কিন্তু হামিমের একটাই দাবী তার বঙ্গবন্ধুকেই লাগবে। এমপি সেলিম ওসমানকে হামিমের উত্তর আমার বঙ্গবন্ধুই লাগবে। কোথা থেকে এনে দিবেন সেটা আপনি জানেন। এ সময় সেলিম ওসমান হামিমকে প্রশ্ন করেন বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও?
হামিমের উত্তর বড় হয়ে আমি মানুষ হতে চাই। হামিমের উত্তরে তাৎক্ষনিক এমপি সেলিম ওসমান তাকে ডায়াসের উপর তুলে দাড় করিয়ে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, হামিমই হচ্ছে ভবিষ্যতের বঙ্গবন্ধু। এ সময় হামিমকে সবার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর মত করে জয় বাংলা বলতে বলা হলে, শিশু হামিম নিজে থেকেই স্লোগান দেন। তবে সেটা ছিল একটু ভিন্ন। স্লোগানে হামিম বলে, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলাদেশ। এ সময় উপস্থিত সকলেই করতালি দিয়ে হামিমকে স্বাগত জানায়।
হামিমের মত একে একে আরো ৪ জন প্রতিযোগীর সাথে মঞ্চে কথা বলেন এমপি সেলিম ওসমান। তাদেরকে বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্নের উত্তর জানলে তারা সকলেই অকপটে সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেন।
এ সময় এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের এটাই আমাদের স্বার্থকতা। আজকে এরা দেশের নতুন প্রজন্ম। ভবিষ্যতে তারা তরুণ হবে। দেশের ভবিষ্যত ওদের হাতেই। আর শিশুকাল থেকেই তারা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে শিখছে। ভবিষ্যতে এরাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। আর সেই সক্ষমতা অর্জনের দ্বার খুলে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক চন্দন শীল, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উপকমিটির আহবায়ক অংকন চন্দ্র সাহা, যুগ্ম সম্পাদক ফারুক বিন ইউসুফ পাপ্পু, মোরশেদ সারোয়ার সোহেল, কার্যকরি সদস্য মোস্তফা কামাল, আলী আকরাম তারেক, আহসানুল হাসান নিপু, আসাদুজ্জামান সুজন, সাধারণ সদস্য আজাদুর রহমান, হাসিন শাহিন পাপ্পু, আনোয়ারুল আলম বাবু, আবদুল খালেক, কমর উদ্দিন আহাম্মদ, মোদাচ্ছেরুল হক দুলাল, সাইফুল ইসলাম মাসুম, বিপ্লব কুমার সাহা, জি এম ফারুক সহ ক্লাবের অসংখ্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
গত ৯ মার্চ শুক্রবার আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্ব এবং ১৭ মার্চ চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় ৩১৯ জন,চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ১১৩৪জন এবং সংগীত প্রতিযোগিতায় ২২৯জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করে। আবৃত্তি,চিত্রাংকন ও সংগীত প্রতিযোগিতায় নার্সারী হতে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত ৪টি বিভাগে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারীদেরকে ক্লাবের পক্ষ হতে যথাক্রমে স্বর্ণ পদক,রৌপ্য পদক ও ব্রোঞ্জ পদক দেয়া হয়। এ ছাড়া প্রতি বিভাগে অতিরিক্ত ১০জন বিশেষ পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট এবং অংশ গ্রহণকারী সকলকে শুভেচ্ছা উপহার বই প্রদান করা হয়।
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক বিজয়ীরা হলেন ‘ক’ বিভাগ অনামিকা রানী সাহা,খ বিভাগ -তানহা বিনতে সেলিম,গ বিভাগ- রাইয়ান আলম রাফিন, ঘ বিভাগ জারিন তাসনীম এরিকা, রৌপ্য পদক বিজয়ীরা হলেন আইরিন এশা প্রাপ্তি, খ বিভাগ- পিদিম রায়,গ বিভাগ- বিবেকানন্দ দাস,ঘ বিভাগ- আকমার আওসাফ কবির খান মাহী এবং ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ীরা হলেন ‘ক’ বিভাগ পূর্নতা ঘোষ, খ নুরুল আফতাব ,বিভাগ -,গ বিভাগ- আনিকা তাহসিন , ঘ বিভাগ তানভীর হাসান রাতুল।
সংগীত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক বিজয়ীরা হলেন ‘ক’ বিভাগ রোজ মেরী,,খ বিভাগ অর্পিতা সেন ত্রপা,গ বিভাগ- গাজী আফনাফ, ঘ বিভাগ হুমায়রা হামীম রোদেলা,রৌপ্য পদক বিজয়ীরা হলেন আরশী দাস,, খ বিভাগ- ত্বাবীব ফাইরুজ রোদশী,,গ বিভাগ- নুসরাত জাহান নওরীন,ঘ বিভাগ- সুচিতা সিরাজ সুচনা এবং ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ীরা হলেন ‘ক’ পিউলি পোদ্দার মেীমিতা, খ – প্রথা ঘোষ ,বিভাগ -গ বিভাগ- নুসরাত জাহান নওরীন , ঘ বিভাগ তুর্য ঘোষ।
আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক বিজয়ীরা হলেন ‘ক’ বিভাগ মুমতাহিনা জাহিন,খ বিভাগ অর্নিলা ভৌমিক অর্নি,গ বিভাগ- খোন্দকার জান্নাত ইউনুছ, ঘ বিভাগ যোহেব আনাফ,রৌপ্য পদক বিজয়ীরা হলেন ক বিভাগ সামন্তী রায়, খ বিভাগ- খোন্দকার তাসনীম ইউনুছ,গ বিভাগ- মায়িশা মঞ্জুর,ঘ বিভাগ-কেয়া বর্মণ এবং ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ীরা হলেন ‘ক’ পিউলি মাহজাবিন মজুমদার, খ -নাজিফা উমাইরা ,বিভাগ -গ বিভাগ- সায়মা খান সারামনি , ঘ বিভাগ নাফিফা হোসেন পুতুল।