বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জে মাদক নির্মূলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান অন্তরায় সোর্স। পুলিশ সোর্সের মাসোয়ারা বন্ধ করে দিলেই পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনকি সোর্সদের মাদক ব্যবসা বাধাহীনভাবে চালিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেরাই পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে প্রতিপক্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিয়ে একক নিয়ন্ত্রনে পুলিশের নিয়োজিত সোর্সরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে বিশেষ পেশার কতিপয় ব্যক্তিও পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে ফায়দা লুটছে বলে জানা গেছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন মাদক সিন্ডিকেটের নিয়োগ করা এজেন্টরা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দিয়ে নিজেদের ব্যবসা নিরাপদ রাখছে। একদিকে সোর্সদের ওপর নির্ভরশীলতা, অন্যদিকে মাদক ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক শেল্টার আর বিপথগামী বিশেষ পেশার সিন্ডিকেটের কারণে অনেকটাই জিম্মিদশার মধ্যে রয়েছে জেলা পুলিশ। ফলে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে গিয়ে উল্টো মিথ্যা অভিযোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে পুলিশকে। তবে পুলিশের বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্য ও মাসোয়ারা আনার অভিযোগও রয়েছে বিস্তর।
জানা গেছে, জেলার ৭টি থানা পুলিশের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একাধিক টিমকে মাদক ব্যবসা ও ডাকাতি নির্মূলের জন্য বিশেষভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলার এ ৮টি স্টেশনেই রয়েছে সোর্সদের দৌরাত্ম্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমাদের বেশিরভাগ সোর্স মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। জেলার রূপগঞ্জ ও ফতুল্লায় সোর্সদের দৌরাত্ব সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। ফতুল্লার পাগলা, আলীগঞ্জ, পূর্ব রসূলপুর, শাহীবাজার, দেলপাড়া, ফতুল্লার লাঁলপুর, পিলকুনি, ডিআইটি মাঠ,ফাজেঁলপুর, পঞ্চবটি, ধর্মগঞ্জ, আমতলা, মাসদাইর বাজার, গলাচিপা চেয়ারম্যান বাড়ী মোড়, মাসদাইর বন্দুক শাহীনের স্পট, শিবুমার্কেট, ভূইঘর, সাইনবোর্ড,তল্লা, আপেলের জামতলার স্পট, অক্টোঅফিস, জেলা কারাগার সংলগ্ন এলাকাগুলোতে মাদকের বিশাল সয়লাব বৃদ্ধি পেয়েছে। আর উক্ত এলাকাগুলোতে থানা পুলিশের নিয়োজিত সোর্সরা মাদকের বড় একটি অংশ নিয়ন্ত্রন করে থাকে। এছাড়া রূপগঞ্জের শুধু কায়েতপাড়া ইউনিয়নের মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত চনপাড়া গ্রাম, চনপাড়া বস্তি, পূর্বগ্রাম, পশ্চিমগাঁও, নাওরা, বাউলিয়াপাড়া, ডাক্তারখালী, বড়ালু, ছাতিয়ান, নগরপাড়া, কামশাইর, বরুনা, মাঝিনাসহ বিভিন্ন গ্রামে রয়েছে কমপক্ষে শতাধিক সোর্স পরিচয়ের লোক।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের জানান জানান, সাধারণ মানুষ অপরাধীদের ব্যাপারে আমাদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন না বলেই সোর্সদের ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে সোর্সদের তথ্য যাচাই-বাছাই করার পরই অভিযান চালাতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।