বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার আরো ১৯ আসামীর আনিত অভিযোগ পড়ে শোনিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি এড. ওয়াজেদ আলী খোকন।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে আসামীদের অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। পরবর্তী যুক্তিতর্কের তারিখ ২১ নভেম্বর দার্য করেছেন আদালত।
আনিত অভিযোগের ১৯ আসামীরা হলেন, র্যাব সদস্য এস আই পূর্ণেন্দু বালা, এ এস আই বজলুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক ও নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন ও বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, সিপাহী আবু তৈয়্যব, নুরুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।
এর আগে ২৪ অক্টোবর সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেফতার নুর হোসেন, তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, লে: কর্ণেল এমএম রানা ও মেজর আরিফ এই ৪ জনের ৩৪২ ধারায় আনিত অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। এসময় তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাত খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার ২৩ আসামীর মধ্যে আরো ১৯ আসামীর ৩৪২ ধারায় অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরি। বাকি ১২ আসামী পলাতক থাকার কারনে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ পড়ে শোনানো যায়নি। পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি। মামলার পরবর্তী যুক্তিতর্কের তারিখ ২১ নভেম্বর দার্য করা হয়েছে।
জানা গেছে, সাত খুনের পর প্রথমে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা হয়। তখন মামলাটি তদন্ত করেন থানার এস আই ফজলুল হক। ইতিমধ্যে তিনি মারা গেছেন। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হলে ২০১৪ সালের ৩ মে হতে ৭ মে পর্যন্ত তদন্ত করেন ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তা আউয়াল তদন্ত করেন। শেষে তিনি বদলী হলে মামলাটির তদন্ত ভার দেওয়া হয় ওসি মামুনুর রশিদ মন্ডলকে। তিনিই মামলাটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল চার্জশিট দাখিল করেন। এখন পর্যন্ত সাতখুন মামলার দুই মামলায় মোট ১০৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
সাত খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। একটি মামলার বাদী নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ে জামাতা বিজয় কুমার পাল ও অপর বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। দুটি মামলাতেই অভিন্ন সাক্ষী হলো ১২৭ জন করে।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম,লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে প্রায় এক বছর পর গত ৮ এপ্রিল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে এখনো ১২ জন পলাতক রয়েছে।