নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জের ভাষা সৈনিক ও রতœগর্ভা মা নাগিনা জোহার কুলখানিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমদিনের দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে জনতার ঢল নেমে ছিল। বৃহস্পতিবার(১০ মার্চ) বাদ আছর তার পরিবারের পক্ষ থেকে শহরের খানপুর হাসপাতালের সামনে মরহুমার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
উক্ত নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তা সহ বিভিন্ন স্তরের হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মরহুমা নাগিনা জোহা নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের জাতীয়পার্টি সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সাবেক প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের মা। সেই সাথে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত (মরনোত্তর) প্রখ্যাত ভাষা সৈনিক সাবেক এমএলএও জাতীয় সংসদ সদস্য প্রয়াত জননেতা একেএম শামসুজ্জোহার সহধর্মিনী।
মরহুমা নাগিনা জোহার পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত দোয়া অনুষ্ঠানে মরহুমার দুই ছেলে ও দুই মেয়ের পরিবারের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
নাগিনা জোহার কুলখানিতে তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে ৪ দিনের কর্মসূচী গ্রহন করা হয়েছে। যার মধ্যে শুক্রবার বাদ আছর বন্দর সমরক্ষেত্র মাঠ, শনিবার বাদ আছর ফতুল্লা ডিআইটি মাঠ এবং রোববার বাদ আছর সিদ্ধিরগঞ্জের নাভানা সিটিতে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত গত ১ মার্চ বাধ্যক জনিত কারনে অসুস্থ্য হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা। ৬ মার্চ থেকে তিনি লাইফ সার্পোটের থাকার পর ৭মার্চ দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তার লাশ নারায়ণগঞ্জের উত্তর চাষাঢ়া পুরাতন নিবাস স্থল হীরা মহলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আত্মীয় স্বজনের শেষ দেখার পর খানপুর হাসপাতালের সামনে বাদ আসর তার নামাজের জানাজা শেষে তার মরদেহ তার বড় ছেলে প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের পাশে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য নাগিনা জোহা ১৯৩৫ সালে অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার কাশেম নগরে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের পরিবারের পূর্বপুরুষদের নামানুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়। বাবা আবুল হাসনাত ছিলেন সমাজ হিতৈষী ও কাশেম নগরের জমিদার। তিনি শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠ পোষকতায় বিশেষ সুনাম অর্জন করেন। নাগিনা জোহার বড় চাচা আবুল কাশেমের ছেলে আবুল হাশিম ছিলেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের মুসলীম লীগের সেক্রেটারি ও এমএলএ। চাচাতো ভাই মাহবুব জাহেদী ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ভাগ্নে পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট নেতা সৈয়দ মনসুর হাবিবুল্লাহ রাজ্য সভার স্পিকার ছিলেন। নাগিনা জোহা ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদালয়ের অধীনে মেট্টিক পাস করেন। ১৯৫১ সালে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের সন্তান রাজনীতিবিদ এ কে এম শামছুজ্জোহার সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। স্বামীর বাড়িতে নতুন বউ হিসেবে এসেই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর শ্বশুর তৎকালীন এমএলএ খান সাহেব ওসমান আলীর চাষাঢ়ার বাড়ি ‘বায়তুল আমান’ ছিল আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু।
মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক, নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলী, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কায়সার হাসনাত, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুল হাই, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ছরোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাউছুল আজম, নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এম ওয়াজেদ আলী খোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মসা এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সিনিয়র সহ সভাপতি মঞ্জুরুল হক, বিকেএমইএ এর পরিচালক জিএম ফারুক, নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খালেদ হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মাসুদ দুলাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, সোনারগাঁও থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান কালাম, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জিল্লুর রহমান লিটন, মহানগর জাতীয়পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মজিদ খন্দকার, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ফয়সাল সাগর, কামরুল হাসান মুন্না, শারমিন হাবিব বিন্নী, ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, সহ সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন, তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের অধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন ভুইয়া, প্রফেসর শিরিন বেগম, অ্যাডভোকেট নুর জাহান বেগম, সোনালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ প্রধান শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা আলী হায়দার, সোনারগাঁও বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহাবুব সরকার, মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফ মাসুদ কাশিপুর ইউপি নেতা এস এম নাসির সহ আওয়ামীলীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।