বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সরকারী তোলারাম কলেজে ছাত্রলীগের উপর নারায়ণগঞ্জের অনলাইন পোর্টল ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’এ চিফ রিপোর্টার সাংবাদিক সৌরভ সিয়ামকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই মারধরের অভিযোগ করেন সাংবাদিক সৌরভ। এদিকে গনমাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন বলে জানান তোলারাম কলেজের শিক্ষকরা। কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক সৌরভ জানান, আমি সৌরভ হোসেন সিয়াম। নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের প্রাণীবিদ্যা ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও নারায়ণগঞ্জের অনলাইন পোর্টল ‘প্রেস নারায়ণগঞ্জ’এ চিফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত আছি। কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ৩য় বর্ষের ফরম ফিল-আপ করতে তোলারাম কলেজের বিজ্ঞান ভবনের চতুর্থ তলায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগে যাই। সেখানে গিয়ে ফরম ফিল-আপের জন্য সকল কাগজপত্র তৈরি করি। পরে ডিপার্টমেন্ট থেকে জানানো হয়, রোববার ফরম ফিল-আপ করতে।
এক পর্যায়ে পিয়াস প্রধান, মেহেদী হাসান প্রিন্স ও শাহরিয়ার পরশ (হৃদয়), সার্থক আহমেদ তোফা, শেখ হাবিবুর রহমান তামিমসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন ছেলে আমার ডিপার্টমেন্টের ভেতরে আসে। আমাকে দীর্ঘক্ষণ যাবৎ অনুসরন করতে থাকে। এই পাঁচ জন জন ২৩/০৪/২০১৮ তারিখে কলেজ ক্যাম্পাসেই আমাকে মারধর করেছিলো বিধায় তাদের উপর আমার সন্দেহ হয়। ঘটনাটা একজন শিক্ষককে জানাই। তার পরামর্শে আমি ডিপার্টমেন্ট থেকে বের না হয়ে সেখানেই বসে থাকি। আমি ভেবেছিলাম, ওটা আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (ডিপার্টমেন্ট), সেখানে আমার পিতৃতুল্য শিক্ষকরা আছেন, শিক্ষার্থীরাও আছে। তাই সেখানে আমি নিরাপদ। এদিকে সেই ছেলেরা বারবার ডিপার্টমেন্টে আসা-যাওয়া করছিল।
তিনি আরো বলেন, আনুমানিক সোয়া বারোটায় পিয়াস প্রধান, শাহরিয়ার পরশ, মেহেদী. তোফা ও তামিমসহ অন্যান্যরা এসে আমাকে ডিপার্টমেন্টের ভেতরেই ঘিরে ধরে। তাদের মধ্য থেকে একজন আমাকে বলে, চল নিচে আয়। উত্তরে আমি বলি, আমি নিচে যাবো কেন? কিছু বলার থাকলে এখানেই বলো। আমি যেতে না চাইলে তারা আমাকে টেনে নিচে নিয়ে যেতে চায়। এক পর্যায়ে আমি স্যারদের ডাকাডাকি করলে ওরা ডিপার্টমেন্টের ভেতরেই আমাকে এলোপাথারি কিল-ঘুষি-লাথি মারতে থাকে। মারতে মারতে তারা বলে, এই কলেজেই পড়ো আবার সাংবাদিকতা করো। সততা দেখাও? নারায়ণগঞ্জের সব সাংবাদিকরে খাইয়া দিমু। একথা বলতে বলতে তারা মারতে মারতে তারা আমাকে ডিপার্টমেন্টের বাথরুমের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চাইলে আমি চিৎকার করতে থাকি। এক পর্যায়ে ওরা মারধর করে চলে যাওয়ার আগে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বলে, আজকে বাঁইচা গেলি। তোর পুলিশ বাবাদের গিয়ে এই কথা বললে একেবারে জানে মাইরা ফেলমু। এক শিক্ষকের সহায়তায় আমি সেখান থেকে বের হয়ে আসি। পরবর্তীতে এ বষিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা ও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার পর জানতে পারি, পিয়াস প্রধান নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক, তামিম সহ সম্পাদক, মেহেদী প্রিন্স একই কমিটির উপ সাংস্কৃতিক সম্পাদক অন্যরা তোলারাম কলেজ ছাত্র সংসদের লোক হিসেবে কলেজে পরিচিত।
সাংবাদিক ভাইয়েরা. আপনারা নিশ্চই অবগত আছেন, এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখ সংবাদ প্রকাশের জেরে তোলারাম কলেজের ছাত্রছাত্রী সংসদ কক্ষের ভেতরে নিয়ে গিয়ে আমাকের বেধরক মারধর করে। পিয়াস প্রধান, পরশ, মেহেদী। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছিল। জিডি নম্বরÑ ১৩৩২। তারিখ-২৪/০৪/২০১৮। আজকে কোন কারন ছাড়াই তারা আমাকে মারধর করে। কলেজের শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি, এতে করে ঐতিহ্যবাহী তোলারাম কলেজের সুনাম ক্ষুন্নসহ শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে সাহসী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ হচ্ছে। এমন অবস্থায় আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি পাশাপাশি তোলারাম কলেজের শিক্ষার পরিবেশ ও নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করছি। আপনারা আমার অগ্রজ। আপনারার জানেন আমি নারায়ণগঞ্জে সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছি। এ বষিয়ে আপনাদের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ বেলা রাণী সিংহ জানান, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কেউ কিছু বলে নি। মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ গনমাধ্যমে জানান, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ব্যস্ত ছিলাম। কোন ছাত্রের উপর মারধরের বিষয়ে আমি এমন কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ ব্যবস্থা নিবো।