নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৩৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ড থেকে শুরু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব।
‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র হে লোহিত্য আমার পাপ হরণ কর’ এই মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরতকী, ডাব, আমপাতা উৎসর্গ করে প্রতিবারের মতো এবারো দেশ-বিদেশের লাখ লাখ পুণ্যার্থীস্নানে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন স্নান উৎসব উদযাপন কমিটি।
সাধু নাগ মহাশয় আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক তারাপদ আচার্য্য জানান, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৩৪ মিনিটে ৩২ সেকেন্ডে শুরু হয়ে লগ্ন শেষ হবে পরদিন বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৪৭ মিনিট ৫ সেকেন্ডে। এর মধ্যে পূণ্যস্নানের মুখ্য সময় বা অমৃতযোগ হচ্ছে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ২৯ মিনিট থেকে ৯টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত।
স্নান উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ কান্তি সাহা জানান, এবারের আয়োজনের প্রস্তুতি ভালো। গতবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেই অনুযায়ী সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়েছে। রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে। নারীদের কাপড় বদলানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শতাধিক টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘাটগুলোকে সংস্কার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন বুধবার বিকেলে লাঙ্গলবন্দে তাদের নিরাপত্তার প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মালম্বীদের স্নানের নিরাপত্তায় তিন দিনব্যাপী বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। লাঙ্গলবন্দের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, আনসার, ডিবির প্রায় সাড়ে ৮০০ সদস্য মোতায়েন থাকবে। পুরো লাঙ্গলবন্দ এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হবে। পুরো দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য থাকবে ওয়াচ টাওয়ার। মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে খোলা হবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকে সব কিছু মনিটরিং করা হবে। যানজট এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া পুণ্যার্থীদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থাসহ দুর্ঘটনা এড়াতে ও উদ্ধারে বিপুল সংখ্যক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী নিয়োজিত থাকবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্তমানে পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাকারিয়া।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৭ মার্চ স্নানোৎসবে পদদলিত হয়ে ১০ পুণ্যার্থীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত হয় আরো ২০ জন।