বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সিদ্ধিরগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে মৌসুমী আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধুকে বিদুত্যের শর্ট ও প্লাস দিয়ে নোখ ছেচে তুলার চেষ্টা , মাররধর করে বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতন করেছে স্বামী ও শশুর বাড়ির স্বজনরা। নির্যাতনে মৌসুমি মানষিক ভারষ্যম্যহীন পড়েছে। মৌসুমি মিজমিজি তালতলা এলাকার কাঁচামালের ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের মেয়ে। এ ঘটনায় শুক্রবার দুুপুরে মৌসুমীর মা বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করতে আসলে মামলা নেয়নি পুলিশ।
নির্যাতিতা মৌসুমীর বাবা আমিনুল ইসলাম জানান, গত ৬ মাস আগে একই এলাকার মৃত রব মিয়ার ছেলের মোঃ তারেকুল ইসলাম (২৫) এর সাথে মৌসুমিকে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় তিনি নগদ স্বর্ণ গয়না ও বিভিন্ন জিনিষসহ দুই ধাপে বরকে ৭০ হাজার টাকা দেন। বিয়ের পর থেকে তারেকুল ইসলাম মৌসুমীকে বাবার বাড়ি থেকে আরো ২লাখ টাকা ও একটি বাড়ির জন্য মারধর করতো। বিষয়টি তিনি লোকলজ্জা ও মেয়ের সূখের কথা ভেবে কাউকে জানানি। এরপরও তিনি নিজের অভাবের মাঝেও কয়েকধাপে ৫/১০ হাজার করে আরো ৫০/৬০ হাজার টাকা তারেকুলকে দেন। কোরবানীর ঈদের পর মৌসুমি বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসলে গত বুধবার তারেকুল মৌসুমিকে এসে নিয়ে যায়। এরপর টাকা না নিয়ে আসায় তাকে রাতভর স্বামী তারেকুল শাশুরি নুর জাহান (৪৭), ভাসুর সুমন (৩২), জাল মুক্তা (২৫) ও ননস সেলিনা (৩৫) নির্যাতন চালায়। এ সময় তারা তাকে নির্মমভাবে মারধর করে বর্বর নির্যাতন করে। প্লাস দিয়ে চেপে ধরে হাত ও পায়ের নোখ ছেচে তুলার চেষ্টা করে। এরপর ও তারা ক্ষান্ত হয়নি। এক পর্যায়ে তারা মৌসুমীর মাথায় বিদ্যুতের শর্ট দেয়। পরে তারা মৌসুমির শরীরের উপরাংশের কাপড় ছিড়ে বস্ত্রহীন করে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর মৌসুমি বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাপ দিয়ে নিজের ইজ্জত রক্ষা করে। পরে লোকজন একটি ওড়না দিলে সে ওড়না শরীরে পেঁচিয়ে পুকুর থেকে উঠে আসে। খবর পেয়ে তিনি ও তার বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন মৌসুমির মুখের নিচ থেকে রক্ত ঝড়ছে এবং সে কথা বলতে পারছেনা। অসংযত আচরন করছে।
পরে তারা মৌসুমিকে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার চিকিৎসা দিয়ে বলেন, মৌসুমির উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। বৈদ্যুতিক শর্টের কারনে সে মানষিক ভারষম্যহীন হয়ে পড়ছে।
এঘটনায় শুক্রবার সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ বলে এ ঘটনায় এখানে কোনো মামলা নেয়া যাবেনা। শনিবার জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য।
মামলা না নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার (সেকেন্ড অফিসার) উপ-পরিদর্শক জসিম উদ্দিন জানান, এরকম ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার রয়েছে। সেখানে আগে জানাতে হবে। সেখান থেকে তদন্ত করে থানায় মামলা নিতে নির্দেশ দিলে পরে তা নেয়া হবে।
