বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘গুরু-শিষ্যের মাঝে ভেদাভেদ না থাকলে আজকে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির পরিবেশ অন্যরকম থাকতো। কেবলমাত্র নেতাকর্মীদের মাঝে ভেদাভেদ সৃষ্টির কারণে এতোদিন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিরতার মধ্যে ছিল।’তাই সবাই মিলে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে একটি ঐক্যবদ্ধ দল গড়ে তুলতে হবে।
দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ দমনে ওয়ার্ড ভিত্তিক জঙ্গি প্রতিরোধ কমিটির অংশ হিসেবে রবিবার বিকেলে ১৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, ‘এমন একটা সময় ছিল, যখন একই পরিবারের সদস্য হওয়া সত্যেও এই শহরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি উত্তর-দক্ষীণ মেরুতে বিভক্ত ছিল। এসময় নেতাকর্মীদের মাঝে দ্বন্দ্বের কারণে এ জেলায় আওয়ামী লীগের ইমেজ ক্ষূণ্য হতে থাকে। কিন্তু যখন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির সিংহপুরুষ একেএম শামীম ওসমান সকল বিভেদ ভুলে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হবার ডাক দিলেন, তখন আর পিছিয়ে থাকতে পারিনি। তার ডাকে সাড়া দিয়ে দলের টানে এবং দলকে সু-সংগঠিত করার লক্ষ্যে সেদিন আমরা উত্তর-দক্ষীণ মেরুর ভেদাভেদ ভুলে একই ছাদের নিচে এসে অবস্থান নিয়েছি। যতদিন বাঁচবো, এভাবেই নেতাকর্মীদের পাশে থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে যেতে চাই।’
এসময় তিনি সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিষোধাগার করে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি আমার কর্মীবাহিনী নিয়ে তাকে নির্বাচনে জয়ী করলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন তার পিতার ইমেজেই নাকী তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের কোন কর্মী তার জন্য কাজ করেনি। তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে গেলেন। এমনকি বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কোন অনুষ্ঠান করলে তিনি সেই অনুষ্ঠান বর্জন করতেন এবং আমাদেরকে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলতে নিষেধ করতেন। সবসময় আমরা তার কাছ থেকে শুধুমাত্র অবহেলা আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্যই পেয়েছি। যখন বুঝলাম এভাবে আর চলতে দেয়া যায়না, তখনই আমার শিষ্য শামীম ওসমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলাম।’
এসময় তিনি সিটি নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল থেকে নির্বাচিত করায় নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত আমি প্রার্থী হিসেবে টিকতে না পারি, তবুও আপনাদের সবাইকে নিয়ে আমি বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শ সৈনিক হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে আওয়ামী লীগের সাথে থেকে রাজনীতি করে যাবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খোকন সাহা বলেন, আমাদের মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ২৭টি ওয়ার্ডে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কর্মী সভা করছি। কিন্তু এই জঙ্গীবাদের সৃষ্টি হয়েছে ২০০১ সালে বরবরোচিত বোমা হামলার মধ্যে দিয়ে। তখন হামলা করেছে বর্ষবরন অনুষ্ঠানে ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের অফিসের সামনে। আমরা জানি কেন তারা এই গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে এর একমাত্র কারণ ক্ষমতায় না যেতে পারায় তারা হামলার ও সন্ত্রাসী এবং জঙ্গীবাদ করছে। ক্ষমতায় আসার জন্য তারা কখনো আইএস বা বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠন নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদী করছে। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে বলছি আপনি জামাতের রাজনীতি পরিহার করুন। তাহলে আমরা আপনার সাথে আলোচনায় বসবো। তা নাহলে আপনার সাথে কোন আলোচনা হবে না। জামাত শিবির রাজাকার আলবদর বাহিনী দিয়ে আপনি কোন দিন সরকার গঠন করতে পারবেন না । নারায়ণগঞ্জে কোন জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের স্থান করতে দেওয়া হবে না।
খোকন সাহা আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ ও সকল ওয়ার্ডের সচেতন মানুষদের নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী কমিটি গঠন করে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে ।
নারায়ণগঞ্জ নাসিক ১৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ লুৎফর রহমান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক এড খোকন সাহা, সহ সভাপতি মোঃ হায়দার আলী পুতুল, গৌপিনাথ সাহা, মো. রবিউল হোসেন, রোকন উদ্দিন, সহ সাধারণ সম্পাদক জি. এম আরমান , আহসান হাবীব, সাংগঠনিক সম্পাদক জি. এম আরাফাত, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, মহানগর সেচছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুয়েল হোসন, ১৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এর সহ সভাপতি খাজা ইরফান আলী, হাবিবুর রহমান হাবিব , মাসুদুর রহমান খসরু, তের নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মোঃ শাহজালাল প্রমুখ ।
এসময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেনকে নাসিক ১৩ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর হিসেবে আ্ওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করেন কর্মী সভার উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

