আনিসুজ্জামান অনু,বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন কার্যালয় ছেড়ে এখনো শহরের জনমনে ছড়াতে পারেনি। তবে নৌকা প্রত্যাশী মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের অসুস্থতার পর হাসপাতালে ভর্তি এবং নাটকীয়ভাবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রাপ্তির ঘটনা শহরবাসীর আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। তবে শহরের আওয়ামীলীগ ও বিএনপি কোন কার্যালয়েই নেতাকর্মীদের তেমন ভীড় নেই। আওয়ামীলীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াত আইভি বিভিন্ন আউলিয়া-দরবেশদের মাজারে ঘুরে বেড়ালেও বিএনপি দলীয় প্রার্থী এড. সাখাওয়াত দু‘দফায় কার্যালয়ে নেতাদের মিটিং ডেকেও সফল হতে পারেননি। এর মধ্যে আনোয়ার হোসেনের খোঁজ নিতে এবং সাহস যোগাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়েদুল কাদেরের ফোনসহ হাসপাতালে মেয়র প্রার্থী আইভিসহ সাংসদ ভ্রাতৃদ্বয় এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি আওয়ামীলীগের থমকে পড়া রাজনীতিতে নয়ামাত্রা যোগ করেছে।
শনিবার সারাদিন নারায়নগঞ্জ ক্লাবে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদারের পরিচালনায় ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শেষ হয়। এরমধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই বর্তমান কাউন্সিলর যুবদল নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার,৭খুন মামলার আসামী নুর হোসেনের বড় বাই নুরে সালাম,সাবেক এমপি বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিনের ছেলে সানবীর,জেলা যুবলীগ নেতা জিল্লুর রহমান লিটন ও ফয়েজউল্লাসহ ১০জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষনা করলে তাদের মাঝে হতাশা নেমে আসে। তবে আগামী ৩দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের শর্ত পূরন করে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে তারা আপিল করবেন বলে খোরশেদ জানান।
রোববার মেয়র প্রার্থীসহ বাকী ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই শেষে ৫ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পরই নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়বে বলে প্রার্থীদের ধারনা। তবে বিকাল সাড়ে ৪টায় শহরের ২নং রেলগেইট এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনিরের মনোনয়ন বৈধ হওয়ায় শুকরানা মিলাদ ও দোয়া মাহফিল চলছে। সেখানে শীর্ষ নেতৃতৃকে দেখা না গেলেও মেয়র আইভির ঘনিষ্টজন জেলা যুবলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আঃ কাদিরকে দেখা গেছে নারায়নগঞ্জ ক্লাবে রিটার্নিং অফিসারের অস্থায়ী কার্যালয়ে তার ছেলে মিনহাজুল কাদিরের মনোনয়ন বাছাইয়ের কার্যক্রমে অংশ নিতে।
অসুস্থ আনোয়ার হোসেনের শারিরীক অবস্থা উন্নতির দিকে থাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে স্বস্তি দেখা গেছে। আনোয়ার হোসেনকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনীত করায় নারাযনগঞ্জের আওযামী রাজনীতিতে ভারসাম্য আসবে বলে তাদের ধারনা। অপরদিকে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আনোয়ার হোসেন আমাকে জানিয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রী তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন। মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ার কথা বলেন। শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই আনোয়ার হোসেনকে জানান,তোমাকে আমরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করেছি।’
প্রধানমন্ত্রীর সেই আশ্বাসের পর আনোয়ার হোসেনের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি দেখা যায়। আনোয়ার হোসেন প্রধানমন্ত্রীকে ফোনেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, নেত্রী আমি আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ চিরঋণী। এ ঋণ আমি শোধ করতে পারবো না। আপনি আমাকে মূল্যায়ন করে আমাকে ধন্য করেছেন।
অপরদিকে একই সময়ে আওয়ামীলীগ কার্যালয় থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় সেখানে নীরবতা থাকলেও নগর বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কয়েকজন কর্মী নিয়ে বসে আছেন। সেখানে কযেকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়,এখনো সরগরম হয়ে উঠেনি কার্যালয়। মনোনয়ন প্রাপ্তির পরে গত কয়েকদিনে প্রার্থী এড. সাখাওয়াত দু‘বার সভা ডাকার চেষ্টা করলেও শীর্ষ নেতাদের একত্রিত করতে পারেননি।