বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সম্প্রতি চীনা কোম্পানির সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়া সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ রুট দিয়ে শীতলক্ষ্যা সেতুর নদীর উপর দিয়ে নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নাসিম ওসমানের নামে অবশ্যই নামকরণ হবে এবং নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে আরো একটি পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ.কে.এম শামীম ওসমান। পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জে ডাবল রেললাইন, ডিএনডি এলাকার উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নয়ন সহ আগামী ২ বছরে বন্দর, নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারী বাদ আসর বন্দরের সমরক্ষেত্র মাঠে শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ ও বন্দরবাসী উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আপনারা শীতলক্ষ্যা সেতুটি আপনাদের প্রিয় নেতা প্রয়াত নাসিম ওসমানের নামে নাম করনের দাবী জানাচ্ছেন। আবার অনেকে আছে যারা হয়তো চায় না সেতুটি নাসিম ওসমানের নামে হোক। তবে আমি এতোটুকু গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, কেউ চাক বা না চাক আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শীতলক্ষ্যা সেতুটি অবশ্যই নাসিম ওসমানের নামে নামকরন করবেন। কারণ আমার ভাইয়ের মৃত্যুর পর জাতীয় সংসদের প্রধানমন্ত্রী নাসিম ওসমানকে যে সম্মান জানিয়েছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোন সংসদ সদস্যকে দেওয়া হয়নি। কারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী নাসিম ওসমানকে নিজের আপন ভাইয়ের মত মনে করতেন।
অচীরেই নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, অনেকে অনেক কিছু করার আগে ঢাক ঢোল পিটিয়ে করেন। কিন্তু আমরা সেটা করি না। আমরা চাই জনগনের সেবার মধ্য দিয়ে আমরা আল্লাহকে পেতে চাই। এখন কেউ নিজের পকেটের টাকা খরচ করে রাজনীতি করেন না। আমার সেলিম ভাইয়া রাজনীতি বুঝেন না রাজনীতি করেনও না। কেউ কেউ আছে যারা আসেন খেতে আবার কেউ কেউ আসেন খাওয়াতে। সেলিম ভাই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বন্দরের উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, সহ বন্দরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার যখন শীতলক্ষ্যা সেতুর চুক্তি স্বাক্ষর হয় তখন আমি ভাইয়াকে দেখে ছিলাম সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেবের হাত চেপে ধরে রেখেছেন। যেটি আমি কখনই সেলিম ভাইকে করে দেখিনি। একদিন পর দলীয় একটি সভায় গিয়ে তার কারণ জানতে পেরেছি। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাকে জানান সেলিম ভাই উনার কাছে নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে আরেকটি পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণের কথা বলেছেন এবং সেতুমন্ত্রী অচীরেই নবীগঞ্জ দিয়ে বন্দরবাসীর জন্য আরো একটি সেতু নির্মাণের কথা দিয়েছেন। তাই আমি বলতে পারি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই সমরক্ষেত্র মাঠেই হয়তো বা সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব এসে নবীগঞ্জ দিয়ে আরো একটি সেতুর নির্মাণের দোয়া অনুষ্ঠানে যোগদিবেন। আমরা আপনাদের কাছে কিছুই চাই না। শুধু আপনাদের কাছে আজকে দোয়া ভিক্ষা চাইতে এসেছি। আপনারা আমার বড় ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন যাতে করে আপনাদের দোয়ায় আমার ভাইটি জান্নাতবাসী হতে পারে। সেই সাথে আপনারা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জন্য দোয়া করবেন তারা যেন সুস্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করবেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান তার বক্তব্যে, প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের স্বপ্ন ও নারায়ণগঞ্জবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের সকলের জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দোয়ায় যাতে করে প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান বেহেস্তে যেতে পারেন এই দোয়া প্রার্থনা করেন।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে আর কোন ঝগড়া বিবাদ নয়। নারায়ণগঞ্জে সকল জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ্য একটাই হওয়া উচিত নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন। নারায়ণগঞ্জের হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে সকল জনপ্রতিনিধিদের একত্রে উন্নয়নের কাজ করে যাওয়ার আহবান রাখেন তিনি।
আরো বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ। তারা সকলেই তাদের বক্তব্যে শীতলক্ষ্যা সেতু বাস্তবায়নের ব্যাপারে বিগত দিনে প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের কঠোর পরিশ্রম ও ভূমিকার কথা তুলে ধরে নির্মিত হতে যাওয়া সেতুটি প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের নামে নাম করনের দাবী জানান।
আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম সোলায়মান, বিকেএমইএ এর সহ সভাপতি(অর্থ) জিএম ফারুক, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল আহম্মেদ সাগর, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, বন্দর থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হাসান কমল সহ স্থানীয় বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্যবৃন্দরা।