বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোক্তার হোসেন ওরফে কিলার মোক্তার (৩৬) এবং তার সহযোগী মানিক (৩৫) নিহত হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় ফতুল্লার পাগলা শাহীবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গোয়েন্দা পুলিশের এ এস আই আজিজ গুরুতর আহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও একটি রিভালবার এবং ৭ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগজিনসহ একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। সংবাদ পেয়ে জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জানা যায়, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল সাদা পোশাকধারী পুলিশ ফতুল্লার পাগলা শাহীবাজার এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হত্যা,চাঁদাবাজি,রাহাজানিসহ একাধিক মামলার আসামি মোক্তার হোসেন ওরফে কিলার মোক্তার ও তার সহযোগী মানিকসহ একদল সন্ত্রাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশ আতœরক্ষার্থে কিলার মোক্তার বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই কিলার মোক্তার এবং তার সহযোগী মানিক নিহত হয় এবং সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে অভিযানে অংশ নেয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এ এস আই আজিজ গুরুতর আহত হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই মাজহারুল ইসলাম জানান, পাগলা শাহীবাজার এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকালে কিলার মোক্তার বাহিনী তাদেরকে লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়লে তারাও নিজেদের আতœরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। তাদের ছোড়া গুলিতে কিলার মোক্তার এবং তার সহযোগী মানিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এ সময় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে অভিযানে অংশ নেয়া এ এস আই আজিজ গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানার তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার মোক্তার ও তার সহযোগী মানিক নিহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি রিভালবার, ৭রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগজিন এবং একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের লাঁশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ খাঁনপুর ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি-এর মোবাইলফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
যেভাবে কিলার মোক্তারের শুরু
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কিলার মোক্তারের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের যাত্রা শুরু হয়। ফতুল্লার পাগলা এলাকার তালিকাভূক্ত সন্ত্রাসী তোফাজ্জল হোসেনের (ক্রসফায়ারে নিহত) সাথে বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কিলার মোক্তারের পরিচিতি কুতুবপুর ইউনিয়ন ব্যাপি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরপর তাকে আর পেছনে ফেরে তাকাতে হয়নি। খোলা হয় তার অপরাধ কর্মকান্ডের হালখাতা। পাগলা এলাকার বিভিন্ন মহল্লা থেকে একাধিক তরুন যুবকদের দিয়ে সে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে। তার নেতৃত্বে পাগলা এলাকায় চাঁদাবাজি, রাহাজানি, মাদক ব্যবসা এবং হত্যাসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত হতে থাকে। পরবর্তীতে পাগলা মুন্সিবাগ এলাকার যুবলীগের নামধারী নেতা আঃখালেকের ছত্র ছায়ায় থেকে ওস্তাদ কিলার খোকনের কাছ থেকে অস্ত্র চালানোর ক্ষেত্রে পারদর্শী হয়ে ওয়াসার জালাল মার্ডারের মাধ্যমে কিলার মোক্তার লাইম লাইটে চলে আসে। কিলার মোক্তার বাহিনীর ভয়তে পাগলাসহ, ঢাকা ওয়াসা এবং কদমতলীর বিভিন্ন এলাকার সাধারন মানুষের মধ্যে আতংকের মধ্যে বসবাস করতে থাকে। এরপর আর সন্ত্রাসী কিলার মোক্তার বাহিনীকে পেছন ফেরে তাকাতে হয়নি। পাগলার মুকুটহীন স¤্রাট হিসেবে ক্ষমতাসীনদের প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় অব্যাহত ভাবে চলতে থাকে তার অপরাধ প্রবনতা। এক পর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর কিলার মোক্তারের চাপ্টারের ইতিঘটে।