বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, এর আগেও অনেকবার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছি। এতদিন আমার কষ্ট লাগেনি। তবে এখন কষ্ট লাগে। কয়েকদিন আগে আমার বাবা, মা ও বড় ভাইসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে শ্মশানের মাটি ফেলা হয়েছে। আমি রাগলে রাস্তাায় তার প্রভাব পড়ে। এখনও ডাকলে দুই চার লাখ লোক আসে। মৃত্যুর আগে বাবা শেখ হাসিনার হাতে আমাদের হাত তুলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ওরা মারা গেলেও কোন আফসোস থাকবে না।
শনিবার (১৯ ফেব্রæয়ারি) বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নের ত্রিবেনী এলাকায় অবস্থিত শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একেএম শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে একথা বলেন তিনি।
দোয়া ও মিলাদের পূর্বে স্কুলে মরহুম শামসুজ্জোহার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার দুই ছেলে এমপি একেএম সেলিম ওসমান ও এমপি একেএম শামীম ওসমান সহ আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দোয়ার পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনার শুরুতে মরহুম একেএম শামসুজ্জোহার স্মৃতিচারন করেন বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান ও বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ।
শামীম ওসমান বলেন, আমার মেজো ভাই ক্লাস নাইনে থাকতে মুক্তিযুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন, বড় ভাইও ছিলেন। আগে মানুষ বলত ওই বাড়ি রাজনীতি করে, তারা সততার প্রতীক। সোনার চামচ মুখে জন্ম নিয়েছি আমরা। তবে ৭৫এর পরে একবেলা ভাত খেয়েছি একবেলা খাইনি। ৯শ টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। ইচ্ছে করলে নারায়ণগঞ্জের অর্ধেক কিনে নিতে পারতেন। পচাত্তরের পরে আমার মাকে গিফট করা হীরা মহলও বন্ধক রেখেছিলেন ১৯৭৪ সালে। বাস্তবতা হল সেদিন যা দেখেছি আগামীতে দেখবো জানি। সেদিন কোন ধনী লোক এগিয়ে আসেনি। আদমজী মিলের শ্রমিকরা এক টাকা করে চাঁদা দিয়ে ছাড়িয়ে দিয়েছিল। বাবা বলেছিল বাড়িটা এখন আর আমার না তোমরা শ্রমিকের বাড়িতে বড় হচ্ছ। তাই তাদের জন্য কথা বলি।
”রাজনীতি মানে এবাদত। রাজনীতি মানে মানুষকে খুশি করে আল্লাহকে খুশি করা। এটা আমার বড় ভাই পেরেছিল, বাবাও পেরেছিল। আমরা হয়ত পারিনি।”
তিনি আরও বলেন, তাদের কাউকে সাক্ষী রেখে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিক। এটাই আমাদের জন্য প্রাপ্য। সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে গিয়ে বলেছিলাম আমি আর কিছু চাই না। তখন তিনি বললেন, তোমার বাবা আমাদের জন্যেও রক্ত দিয়েছে। তিনি আমারও চাচা। তিনি কী পরিমান আল্লাহ ওয়ালা মানুষ তা আমি দেখেছি। আমাদের জীবনের ভরসা নেই। তাই সকলে সকলের জন্য মাফ চাই। যারা চলে গেছেন আমি তাদের সকলের জন্য দোয়া করছি। আপনারা আমার বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের জন্য দোয়া করবে এবং দোয়া করবেন আল্লাহকে খুশি করে যেব মরতে পারি।
দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বন্দর উপজেলার নির্বার্হী কর্মকর্তা কুদরত-এ-খোদা, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিপক কুমার সাহা, বন্দর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, জেলা যুবসংহতির আহবায়ক রিপন ভাওয়াল, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ গাজী সালাম, ধামগড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা।