বিজয়বার্তা ২৪ ডট কম
দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহি আলীগঞ্জ খেলার মাঠ রক্ষার জন্য আন্দোলন করে আসছে জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা আলহাজ্ব কাউছার আহমেদ পলাশ সহ ক্রীড়ানুরাগী, ক্রীড়া সংগঠক, আলীগঞ্জ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সর্বস্তরের জনসাধারন। বহু্ ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করে চলা আলীগঞ্জ খেলার মাঠটি যেন আলীগঞ্জবাসীর প্রাণ। তারা যে কোন মূল্য এই মাঠটি রক্ষা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে আলীগঞ্জের যে ১১ দশমিক ৬৫ একর জমিতে ৮টি ১৫ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে ৫ দশমিক ৭০ একর জমিতে আলীগঞ্জ খেলার মাঠটিও অবস্থিত। যার মালিক জনৈক আরবী খানম। এছাড়া আশপাশে থাকা আরো ২ একর ২৩ শতাংশ জমি নিয়ে সরকারের সঙ্গে জনৈক শাহ আলমের এবং ৪৭ শতাংশ জমি নিয়ে আহসানুল করিম চৌধুরীর, যার মামলা চলমান।
এদিকে ঐতিহ্যবাহি এ আলীগঞ্জ খেলার মাঠ রক্ষা করে ৮টি ১৫ তলা ভবন নির্মাণ সম্ভব কিনা তা ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ। সোমবার (২৯শে আগষ্ট) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এর সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ আদালতের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১১ আগষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনের জন্য আলীগঞ্জ মাঠসহ তৎসংলগ্ন ১১ দশমিক ৬৫ এক জমিতে ৮টি ১৫ তলা ভবন নির্মাণের পুনদরপত্র আহবান করা হয়। পুনদরপত্রটি আহবানকারী ঢাকা গণপূর্ত সার্কেল-৪ এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম গোলাম কবিরকে মামলায় পক্ষভুক্ত এবং পুনদরপত্রটি বাতিল চেয়ে রোববার রিটকারী কাউসার আহমেদ পলাশ ওই বেঞ্চে আবেদন করেন । শুনানী শেষে উচ্চ আদালত ঢাকা গণপূর্ত সার্কেল-৪ এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একেএম গোলাম কবিরকে মামলায় ৯নম্বর বিবাদী এবং পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে তদন্তর নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী আমিমুল এহসান জোবায়ের সাংবাদিকদের জানান, গত ৭ এপ্রিল একনেকের সভায় সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসনের জন্য ৬৭২টি ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আলীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জাতীয় শ্রমিকলীগের শ্রম উ্ন্নয়ণ ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব কাউসার আহমেদ পলাশ ঐ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করেন। এ রিটের প্রেক্ষিতে একনেকের সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে জানতে চেয়ে ৪ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব, অর্থসচিব, পরিকল্পনা সচিব, গণপূর্ত সচিবসহ ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি রুল জারি করা হয়। কিন্তু রুলের জবাব না দিয়ে প্রথম দফায় ৮টি ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হলে বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনা হয়। এদিকে সরকার পক্ষ থেকে দরপত্র বাতিল না করার আহবান জানিয়ে বলা হয়, সরকারের নকশাতেও মাঠ রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালতের বেঞ্চ তখন সরকার পক্ষের এ বক্তব্যকে হলফনামা আকারে আদালতে জমা দিতে বলা হয়। ঐ সময় প্রথম দরপত্রটি বাতিল করা হলেও আদালতে হলফনামা জমা না দিয়েই আবারো গত ১১ আগষ্ট পুনদরপত্র আহবান করা হয়। একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে রোববার বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনা হলে বিচারপতিদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার ঐ আদেশ দেন।
