বিজয় বার্তা ২৪ কম
আজ ১ অক্টোবর ২০০১ ইং। আজকের দিনের পরে বেশ কিছু দিনের জন্য নাঃগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ অফিসে তালা ছিলো। তৎকালীন সময়ে অনেকের পার্টি অফিসে বসতে অনিহা ছিলো। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে জরুরী ভিত্তিতে এই স্থবিরতা কাটাতে সাবেক সাংসদ এস,এম,আকরাম ভাইকে পাঠানো হয় নাঃগঞ্জে। নাঃগঞ্জ শহর ও বন্দরের দলের বড় ভাইরা আসেন,তাদের আসার আগে পার্টি অফিসের পূর্ব পাড়ে আমরা সবাই দাঁড়িয়ে, আকরাম ভাই পার্টি অফিসের চাবি খোজ করলেন। আধা ঘন্টা সময়ের মধ্যেও খোজ পাওয়া গেলো না!!! সবাই এক সাথে পার্টি অফিসে যাওয়ার পর, তালা ভাঙ্গার দায়িত্ব পড়লো আমার আর রন্টির। রন্টি হাতুড়ি নিয়ে আসলো পাশের এক দোকান থেকে, তালা ভেঙ্গে ভেতর থেকে ধূলায় ভরা চেয়ার মুছে আকরাম ভাইকে বসতে দিলাম বাইরে।
তারপর টানা কয়েক বছরের জার্নি। লিখবো কোন একদিন, হয়তো লিখবো না। পৌর নির্বাচন প্রসংঙ্গে আমাদের আগ্রহ ছিলোনা বলে পার্টি অফিসে এস,এম,আকরাম ভাই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ডাকলেন। তার অনেক বুঝানোর পরেও আমাদের মন গলছিলো না, তিনি আমাকে বললেন তোমরা কি আমাকে দেখে ছাত্রলীগ করো নাকি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে দেখে ছাত্রলীগ করো? উত্তর দেওয়ার পর তিনি বললেন তাহলে আনোয়ারের জন্য কাজ করো, তোমাদের গ্রুপ ছাড়া শহরে তার জন্য কাজ করার অন্য কোন গ্রুপ নাই। এখন, তোমরা কাজ না করলে এটা দলের বেইজ্জতি। একটা কথা মনে রাখবা তোমরা ছাত্রলীগ দলের সম্পদ, তাই নেতার কমান্ড মেনে চলবা, তবে আমিও যদি দলের বিপক্ষে চলে যাই আমার কমান্ড সেই দিন থেকে মানবা না।
এখন যেয়ে কাজ করো, এটা আমার অর্ডার, তোমাদের নেতা শামীমের অর্ডার।
আকরাম ভাই এখন নাগরিক ঐক্যের নেতা সম্ভবত, তিনি দল বদলের আগে থেকেই তার সাথে দেখা হয়না আর।
চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন চাষাড়াতে সেন্ট্রাল নেতাদের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো বিচ্ছু বাহিনী বলে, উনারা নিজেদের থেকে আমাদের সাথে করমর্দন করতে আসলেন এমন সময় খবর আসলো তোলারামে জাল ভোট চলছে আমি সাথে সাথে করমর্দন বাদ দিয়ে ভিক্টর দেখিয়ে জয় বাংলা বলে বিদায় নিতে নিতে সেন্ট্রাল নেতাদের একজনকে উচ্ছাসিত হয়ে বলতে শুনলাম, শামীম ওসমানের পিচ্ছি পুলাপান গুলা আসলেই বিচ্ছু, এই তোমাদের ঢাকাতে দাওয়াত, তোমরা সবাই আসবে আকরাম ভাইয়ের সাথে।
আর যাওয়া হয় নাই, তখন পদধারী নেতৃত্ব, সেন্ট্রাল লবিং এইসব বুঝতাম না। এটা বুঝতাম আমাদের পূর্বপুরুষের স্বাধীন করা এই ভূমিই নিরাপদ নয় আমাদের জন্য।
যে কোন সময় হত্যাকান্ডের শিকার হতে পারি জামায়াত বিএনপির উগ্রবাদীদের হাতে, কানের পর্দাফাটা রক্ত তখনো শুকায় নাই।
তখন আইভি আপা, শামীম ওসমান সাহেবের সাথেই ছিলো, ভাই বোন এক সাথে ছিলো। নাঃগঞ্জের আওয়ামী লীগ অফিস উনাদের পৈতৃকসম্পত্তি, আমাদের পৈতৃকসম্পত্তি, শেখ হাসিনার পৈতৃকসম্পত্তি, জাতির পিতা শেখ মুজিবের সম্পত্তি।
ভাঙ্গা তালার ওই চাবি এখনো কার কাছে?
জানতে মন চায়?
পুনশ্চঃ রাগ গোস্বা বাদ দিয়ে এখনো সময় আছে কর্মী বান্ধব নাঃগঞ্জ আওয়ামীলীগ অফিস গড়ে তোলার, আপনাদের দলের নিরীহ কর্মী হিসেবে আবেদন করতেই পারি। নইলে আবার তালা ভাঙ্গার জন্য কাউকে খুজে পাবেন কি?
লেখক-শেখ মিজানুর রহমান সজীব- সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগ, নারায়ণগঞ্জ।