বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া রায় থেকে তাকে ‘অবশ্যই মুক্ত করা হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অনির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা তারেক রহমানকে মুক্ত করে আনবো।
রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর বিএনপির এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফখরুল। হাইকোর্টে তারেক রহমানের সাজা হওয়ার প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাই অর্থপাচার মামলায় তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে আদালত।
এর আগে, অর্থপাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলা করে দুদক। বিচার শেষে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন। অপর আসামি গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের এই রায় বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই মামলায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছিল, এ মামলার মধ্যে কোনোকিছু নেই। কিন্তু তারপরেও কেন এই রায়?
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দিয়ে আপিল করানো হয়। উদ্দেশ্য, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা এবং তিনি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারেন সেই ব্যবস্থা করা। সেজন্য তার বিরুদ্ধে এই রায়। গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে যারা বিশ্বাস করে, যাদের মধ্যে দেশপ্রেম রয়েছে; তাদের কাছে এই রায় গুরুত্বপূর্ণ। তবে রায় নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। প্রয়োজনে আমরা প্রতিবাদ জানাব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা জানি, এই সরকারের কাছে কোনোকিছু চেয়ে লাভ হবে না। সেজন্য একমাত্র ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অনির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা তারেক রহমানকে মুক্ত করে আনবো, ইনশাল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বেগম খালেদা জিয়া যখন সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, তখন এই রায় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের যে বক্তব্য তার সঙ্গে মিলে গেলো। অর্থাৎ তারা কোনো জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাস করেন না। এই সন্ত্রাস-উগ্রবাদকে তারাই মদদ দিচ্ছে। এই জন্য তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এখন ঘরে বসে থাকার সময় নেই। দলকে সংগঠিত করতে হবে। পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন-দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বেগম সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাশার, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, বর্তমান সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ।