বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
শহিদ তাজুল স্মরণে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে আজ বিকাল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট মন্টু ঘোষ, হাফিজুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আবু হাসান টিপু, গার্মেন্টম শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অঞ্জন দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা সাচ, বিপ্লবী শ্রমিক সংহতির নেতা শহিদুল ইসলাম নাননু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি জেলার সম্পাদক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৮৪ সালের ২৯ ফেব্রæয়ারি রাতে আদমজী পাটকলে শ্রমিক ধর্মঘট বানচালের উদ্দেশ্যে তৎকালীন ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী এরশাদের গুÐাবাহিনী শ্রমিক মিছিলে হামলা করে তাজুলকে উপর্যুপরি ছুড়িকাহত করে। ১ মার্চ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুবরণ করে। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান, যানবাহন ও কলকারখানার লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কাজ বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসে। দেশব্যাপী তীব্র আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ (স্কপ) এর ৫ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। সেই থেকে ১ মার্চ শহিদ তাজুল দিবস পালিত হয়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বর্তমান সময়ে দল নিরপক্ষ একটি অন্তবর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার মিলিত আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর এ সরকার ক্ষমতাসীন হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষ এক দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী। কিন্তু শ্রমিকের মজুরি বাড়েনি। ফলে শ্রমিকরা তাদের খাদ্য তালিকা খাবার কমিয়ে, ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা বন্ধ করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে ৮৫ ভাগ শ্রমিক অপ্রতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। দেশে জাতীয় নি¤œতম মজুরি কোন আইন নেই। গার্মেন্টসে নি¤œতম মজুরি নারায়ণগঞ্জে অধিকাংশ কারখানায় মজুরি বাস্তবায়ন হয়নি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকরা তার ন্যায্য দাবির কথা বললেই মারধর করে, মালিকরা শ্রম আইন ও বিধির শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী আইন ব্যবহার করে শ্রমিক ছাঁটাই করে, দেয় মিথ্যা মামলা। একটি গণতান্ত্রিক শ্রম আইন এখনও শ্রমিকের কাছে একটি স্বপ্নমাত্র। বর্তমান সংকটকালে শ্রমিকরা রেশনের দাবি করলেও সরকার এব্যাপারে নিশ্চুপ। এ সময়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনই শ্রমিকের অধিকার আদায়ের একমাত্র পথ। এক্ষেত্রে শহিদ তাজুলের আত্মত্যাগের সংগ্রামের শিক্ষা শ্রমিকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। সমাবেশের প্রারম্ভে শহিদ তাজুলের প্রতিকৃতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।