বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সেবার মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, জনগণের সেবা। চাকরির স্বার্থে চাকরি করবেন না। মনে রাখবেন, জনগণের সেবা করতে হবে। তাদের শ্রম থেকেই এই বেতন-ভাতা আসে।’
শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জনপ্রশাসন পদক-২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় ও জেলা পর্যায় মিলিয়ে মোট ৩০ জন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানকে জনপ্রশাসন পদক-২০১৬ প্রদান করা হয়েছে।
প্রথমবারের মতো জনপ্রশাসন পদক প্রদান করা হলো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে উৎসাহ দিতে এই পদক প্রদান করা হলো। প্রয়োজনীয় কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, তার জন্য আমরা নানামুখী কাজ হাতে নিয়েছি। সবাই এমনভাবে কাজ করবেন যাতে আমরা আরো এগিয়ে যেতে পারি। দেশের মেধাবীরা যেন সরকারি কাজে আসতে আগ্রহী হয়, তার জন্যও এই আয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে আমরা দেশের স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতা না পেলে দেশ আজকের এই অবস্থানে থাকত না।’ তিনি বলেন, ‘১৯৫৬ সালে ৯ জানুয়ারি করাচিতে ডন পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় সরকারে বাংলাদেশিদের অবস্থান কী ছিল তা তুলে ধরা হয়। ওই সময়ে সরকারের কোনো কোনো সেক্টরে বাঙালি ছিল না, কিছু সেক্টরে বাঙালি ছিল, তার সংখ্যা ছিল খুবই কম।’
বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর তিনি একটি সংবিধান দিয়েছিলেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় হাতে পেয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে নতুন করে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি প্রশাসনের সব সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করেছিলেন। অথচ ষড়যন্ত্রকারীরা হঠাৎ টেলিভিশনে ভাষণ দিয়ে রাষ্ট্রপতি হলে, নিজের ব্যক্তিস্বার্থ সিদ্ধির কাজ ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করাই ছিল তাদের লক্ষ্য।’
দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই উন্নয়নকাজে প্রশাসনের প্রত্যেকের কাছে সহযোগিতা পেয়েছি। আপনারা স্ব স্ব পদে যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন বলেই দেশের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন করেছি, তেমনি প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর কাজ করেছি। আর ব্যাপক পদোন্নতি দিয়েছি। দেশের ইতিহাসে এত পদোন্নতি আগে কখনো হয়নি।’
প্রশিক্ষণের বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এখন উন্নয়ন পরিকল্পনার ৯০ শতাংশ আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে হয়। জীবনমান ভালো হয়েছে। আমাদের সময় শেষের দিকে এগিয়ে আসছে। আমরা চাই সরকারের নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক। কারণ, আমরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসি। এ জন্য হাতে নেওয়া কাজগুলো যাতে হয়, সে জন্য তাগাদা থাকে। না হলে অন্য সরকার এসে এগুলো বন্ধ করে দেয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যা আসবেই, এগুলো মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে। কিছুদিন আগে গুলশান, শোলাকিয়ায় হামলা হয়েছে। এগুলো মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ বাংলার মাটিতে হতে দেব না।’