নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একে এম সেলিম ওসমান বলেছেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । তিনি ও আওয়ামীলীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিশেষ সম্মান করছেন। আমরা সবাই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। আমরা আজ জয় বাংলা বলতে পারছি। বঙ্গবন্ধুর সপ্নের বাংলা একে একে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে এদেশে সাধারণ মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেন সে সব মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করছে এই সরকার।
শনিবার সকাল ১১টায় ১ নং বন্দর খেয়া ঘাট এলাকায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড এর কমপ্লেক্স ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সেলিম ওসমান আরও বলে, আমি আজ গভীরভাবে স্মরন করি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক প্রয়াত সংসদ সদস্য একেএম নাসিম ওসমানকে যিনি একবার না দুই দুই বার এদেশের জন্য যুদ্ধ করেছিল। একবার অংশ গ্রহণ করেন মহান সবাধীনতা যুদ্ধে আরেক বার করেন ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে স-পরিবারে হত্যা করার পর। আমি আরও ধন্যবাদ জানাই জানাই নৌ মন্ত্রীকে যিনি তার নৌ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ষোল শতাংশ জায়গা আমাদের নারায়ণগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করার জন্য দিয়েছেন। যখন আমরা এই জায়গাটা বরাদ্দ পেলাম তখন জায়গাটা ছিল দখলকৃত। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া এই জায়গাটা আমরা দখল মুক্ত করি। জেলা মুক্তিযোদ্ধাদের এই কমপ্লেক্সটি হবে ১৬ শতাংশ জায়গার উপর আর পাঁচ তালা ফাউন্ডেশন বিল্ডিং এবং তিন তলা পর্যন্ত করা হবে যদি সরকার থেকে অনুমতি দেন তাহলে আমি আমার ব্যবসায়ী বৃন্দদের সাথে আলাপ আলোচনা করে পাঁচ তলা করে দিবো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ড এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী এর সভাপতিত্বে ও সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম এর সঞ্চলনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, নারায়ণগঞ্জ সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, নারায়ণগঞ্জ জেলার পিপি এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, গনপূর্ত বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর নির্বাহী ভূমি অফিসার মাসুম আলী বেগ, নারায়ণগঞ্জ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বাবু চন্দন শীল, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু জাহের সহ বিভিন্ন থানার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ড এর নেতৃবৃন্দ ।
সেলিম ওসমান আরও বলেন আমি কোন রাজনীতিবিদ না আর আমি রাজনীতি করি না । আমি সব দলের মানুষকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। নারায়ণগঞ্জে লিংক রোডের পাশে ভাষা সৈনিক শামসোজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয় এর অনুমোদন হয়েছে এবং বন্দর কদম রসুল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আর পালা ক্রমে নারায়ণগঞ্জে আরও একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণ করা হবে। আমি আমার সদর ও বন্দরে প্রায় দশটি স্কুলের কাজ শেষ করতে পেরেছি। আগামী বছরের আগেই তা চালু করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি বন্দরের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি মুক্তিযোদ্ধা অডিটিউরাম স্থাপন করব। আর আমি এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সকল সংসদ সদস্য অনুরোধ করছি আপনার আপনাদের সকল স্কুল ও বিদ্যালয়ে একজন করে মুক্তিযোদ্ধা নিয়োগ করবেন যাতে তারা আমাদের আগামী প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস ও স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রকৃত সত্য জানতে পারে। আর মুক্তিযোদ্ধারা কারও বোঝা না আমরা সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করব । যাতে করে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকবে। তিনি আরও বলেন, এদেশে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করে বিভিন্ন শিক্ষিত ও ভাল পরিবারের সন্তানরা জঙ্গী সংগঠন গুলোতে জড়িয়ে পড়েছেন । তাই আমাদের উচিত আমাদের সন্তানদের ভালভাবে খেয়াল ও দেখাশোনা করতে হবে । যাতে করে তারা সন্ত্রাস বা জঙ্গীসংগঠন গুলোতে জড়িয়ে না পড়ে ।
সভাপতি বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স হবে । সেলিম ওসমান এমপি এর বরাদ্দ দিয়েছেন । মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যা যা দরকার সেলিম ওসমান তাই করবে কারণ তিনি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা । আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এখানের সকল মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি । আর জননেত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গীবাদ উৎখাত করার যে ঘোষণা করেছে আমরা সকল মুক্তিযোদ্ধারা আবার দেশের জন্য জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে রুখে দাঁড়াব। দেশের প্রয়োজনে সকল মুক্তিযোদ্ধারা আবার বন্ধুক হাতে তুলে নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।