বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন,
গত তিন দিনের সামান্য বৃষ্টিতে ডিএনডি (ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, ডেমরা) বাঁধের ভিতরে বসবাসকারী ৩০ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার কারনে পানি বন্দি হয়ে থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়িত না হলে এবং ডিসেম্বরের পরেও যদি ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় তবে এই খালের নোংরা পানিতে নেমে অবস্থান নিব। আমার সেনাবাহিনীর ভাইয়েরাও জলাবদ্ধতা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত আমাকে পানি থেকে তুলতে পারবে না।
রোববার (২ জুলাই) দুপুর ২টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন শিমরাইল এলাকায় শিমরাইল পাম্প স্টেশন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি তার নির্বাচনী এলাকার জলাবদ্ধতা রয়েছে এমন বেশ কযেকটি এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, ডিএনডি বাধের ভিতরে ৩০-৪০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এখানে কালের পরিক্রমায় বিভন্ন ধরনের ভারী শিল্প গড়ে উঠেছে। এসব ইন্ডাস্ট্রির বর্জ্য এই এরাকার খালগুলো দিযে নিষ্কাশিত হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ময়লাসহ এমন কোন বিষাক্ত ময়লা নেই যা এই পানিতে নেই। এখানকার বাসিন্দারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওপর ভরসা করেন, বিশ্বাস রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসাবে আমাদের তার বিশ্বস করেন। এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছ। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত না হয় এবং আবারো এই এলাকায় জলাবদ্ধতার তেখা দেয় তবে তা যতক্ষণ অপসারণ করা না হবে আমি ততক্ষণ পর্যন্ত ওই ড্রেনের গলা সমান পানিতে নেমে অবস্থান নেবো। প্রকল্পটি সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আমার সেনাবাহিনীর ভাইয়েরাও আমাকে ময়লা পানি থেকে উঠাতে পারবে না, যতক্ষণ আমার মা-বোনেরা, আমার ভাইয়েরা এই পানিতে দুর্ভোগে থাকবে।
শিমরাইল পাম্প স্টেশনের কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, আজ রাতের মধ্যে জমে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে। আগামীকাল আর পানি থাকবে না। আমি আশা রাখি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে। গতকাল রাতে পানিসম্পদ মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে আস্বস্ত করেছেন এবং কিছুদিন সময় চেয়েছেন। যদি আপনাদের কোন গাফলতির কারনে জলাবদ্ধতায় আমার এলাকার মানুষ কষ্টে থাকে তবে যেই এলাকায পানি জমবে আমি সেইসব এরাকায় যেয়ে ময়লা পানিতে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাবো। যা হবার হবে।
তিনি আরো বলেন, আমার পানির কানেকশনটা তো ড্রেনের সাথে থাকতে হবে। সিদ্ধিরগঞ্জ পুরো এলাকাটাই সিটি করপোরেশনের আওতায় পড়েছে। সিটি করপোরেশনের কাছে অনুরোধ যেন অতিশিঘ্রই সিদ্ধিরগঞ্জের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক করে। এই এলাকার পানি যেন সরাসরি ডিএনডি খালে যায়। তবে আমাদের চেষ্টার সুফর এই এরাকার মানুষ ভোগ করতে পারবে। সেনাবাহিনীর কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর ১৯ ইসিবি, ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। তাদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমি প্রত্যাশা করি তারা ঠিক সময়ের মধ্যেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারবে। এবং তারা আস্বস্ত করেছেন নতুন করে এই প্রকল্পে আর কোন অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না।
ডিএনডি প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রজেক্টের সম্পুন্ন কাজ শেষ করেতে আগামী জুন মাস পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে। তবে প্রকল্পের কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করার চেষ্টা চলছে। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারনে যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে আজ বিকেল নাগদ পানি সেচে কমিয়ে আনা হবে। তবে তিনি সংস্কার করা খালে ময়লা আর্বজনা না ফেলার আহবান জানিয়ে বলেন, জনগনে সচেতন হতে হবে। যাতে পানি পাম্প হাউজে আসতে কোন বাধাঁ সৃষ্টি না হয়।
এসময়, শিমরাইল পাম্প স্টেশনের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ১৯ ইসিবি ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড’র কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।