বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ভারতীয় কোম্পানির সাথে রামপাল কয়লভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামোগত চুক্তি করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তেল-গাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ড. আনু মোহাম্মদ।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সুন্দরবন চুক্তি বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সমাবেশের আয়োজন করে তেল-গাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎবন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
অনুষ্ঠানে আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করছে। অথচ সরকার কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি ছাড়াই সুন্দরবনে কয়লাভিত্তিক বিদুৎকেন্দ্র চালুর চুক্তি করেছে। এ চুক্তি সুন্দরবন বিনাশী। সুন্দরবন ধ্বংস হলে দেশের মানুষ বিভিন্ন প্রাকৃতিক ক্ষতির সম্মুখিন হবে। তাই বলা যায়, সরকার এ চুক্তির মাধ্যমে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সুন্দরবনের আগে ভারতীয় কোম্পানি এনিডিপিসির সঙ্গে শ্রীলংকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর একটি চুক্তি হয়। ওই দেশের ক্ষতির কথা বিবেচনা করে এবং ওই প্রকল্পের বিরুদ্ধ সাধারণ মানুষের অন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার চুক্তি বাতিল করে। কারণ শ্রীলংকা সরকারের মেরুদণ্ড আছে। বাংলাদেশেও সাধারণ মানুষ সুন্দরবন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু সরকার তা দেখছে না।’
আনু মোহাম্মদ বলেন, ‘সুন্দরবনকে আর্থিক মূল্যে বিবেচনা করলে চলবে। এ বন থেকে আমরা যেমন মূল্যবান সম্পদ পাই তেমনি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বন আমাদের রক্ষা করে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয় যাবে। পৃথিবীতে যে কোনো কিছু পুনরায় বানানো সম্ভব। কিন্তু আরেককটি সুন্দরবন তৈরি করা অসম্ভব।’
সুন্দরবনের পক্ষে মানুষের অবস্থান জানতে সরকারকে একটি গণভোটের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন কিংবা সদ্য শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনের মতো নয়, একটি সুষ্ঠু ভোটের আয়োজন করুন। যেখানে সাধারণ মানুষ অংশ নিতে পারবে। দেখবেন ৯৯ শতাংশ মানুষের ভোট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের পক্ষেই পড়বে।’
সমাবেশে আগামী ২৮ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত গণপদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাসদ নেতা বজলুল রশিদ, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্নয়ক জোনায়েদ সাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাইয়ুম উদ্দীন খান প্রমুখ।