বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
‘সার্ভিস ফাস্ট প্রফিট নেক্সট’ স্লোগান নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ সংসদীয় আসনের বন্দর মদনপুর এলাকায় উদ্বোধন হলো বারাকাহ মেডিকেল কলেজের আংশিক বারাকাহ ডায়গনষ্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার। শুক্রবার ১৫ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ফিতা কেটে সেন্টারটির উদ্বোধন করেন।
সাবেক বিচারপতি আ.স.ম আব্দুর রব এর উদ্যোগে অন্যান্য শেয়ার হোল্ডাদের ব্যবস্থাপনায় আধুনিক মানের এ হাসপাতালটি নির্মানার্ধীন রয়েছে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে বারাকাহ ডায়গনষ্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার রূপ নিবে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজে। যেখানে থাকবে বিশ্ব মানের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। হবে ৮ তলা, ১২ তলা ও ১৬তলা বিশিষ্ট ৩ তিন বহুতল ভবন। যেখানে রাজধানী ঢাকার সুনামধন্য প্রাইভেট হাসপাতাল গুলোতে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে তার সবই থাকবে এই প্রতিষ্ঠানটিতে। ওপেন হার্ট সার্জারী থেকে শুরু করে সকল ধরনের চিকিৎসা প্রদান করা হবে প্রতিষ্ঠানটিতে।
হাসপাতালটির চেয়ারম্যান আ.স.ম আব্দুর রব জানান শুধু রোগীকে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছানো রোগীর স্বজনদের। হাসপাতালে পৌছানোর পর রোগীর বাকি দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালটি নিমার্নে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আ.স.ম আব্দুর রব সহ অনুষ্ঠানের সকল বক্তারা। ২০১২ সালের ২৯ জুন প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমান হাসপাতালটির ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করে ছিলেন। এরপর দীর্ঘদিন বিভিন্ন জটিলতায় হাসপাতালটির নির্মান কাজ বন্ধ থাকার পর উপনির্বাচনে সেলিম ওসমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে পুনরায় হাসপাতালটির নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। এ সময় তিনি হাসপাতালের নির্মান কাজে কোন প্রকার সমস্যা সৃষ্টি না করার জন্য কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে এলাকাবাসী সবাইকে নির্মান কাজে সহযোগীতা করার আহবান রাখেন। সেলিম ওসমানের উদ্বোধনের দ্বিতীয় বছরে এসেই শুক্রবার হাসপাতালটির আংশিক উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, যে কাজটি করার দায়িত্ব ছিল আমাদের সেই কাজটি করেছেন বারাকাহ হাসপাতাল। হাসপাতালটি দেখে মনে হচ্ছে আমার চিকিৎসার জন্য আর থাইল্যান্ড যেতে হবে না। বারাকাহ হাসপাতালেই আমি চিকিৎসা নিতে পারবো। আল্লাহর কাছে তাদের সাফল্য কামনা করি। হাসপাতাল একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলেও এর মাধ্যমে জনগনের সেবাই প্রধান লক্ষ্য এবং বারাকাহ হাসপাতাল সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্যই এসেছে। আমি এলাকাবাসীর সবাইকে বারাকাহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করার আহবান রাখছি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি বলেন, এই এলাকার কোন আধুনিক হাসপাতাল নেই। তাছাড়া এই এলাকার দরিদ্র মানুষের বসবাস। তাই আধুনিকায়নের ব্যবহার তারা সঠিক ভাবে নাও জানতে পারে। তাই প্রথম দিকে আপনাদের হয়তো সমস্যা হতে পারে। বিষয় গুলো আপনারা একটি খেয়াল রাখবেন। তাছাড়া হাসপাতালে যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলার আশঙ্খা থাকলে আমি আপনাদের পরামর্শ দিবো স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সহ স্থানীয়দের নিয়ে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করতে পারেন। যাতে করে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তারা বিষয়টি সমাধান করতে পারেন। তবে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি এর জন্য আপনাদের তাদের কোন প্রকার পে করতে হবে না। এমনকি এক কাপ চাও খাওয়াতে হবে না।
কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের পক্ষ থেকে যদি কমিউনিটি চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা তাহলে আমার পক্ষ থেকে একটি পিকাপ গাড়ি দেওয়া হবে যাতে করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসকেরা রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারেন। এছাড়াও বন্দরের স্কুল গুলোকেও যদি স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনা যায় এ ব্যাপারে তিনি সার্বিক সহযোগীতা করবেন। স্কুলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক সময় তাদের সমস্যার কথা কাউকে বলতে পারেনা তাই তারা এর সঠিক চিকিৎসাও নিতে পারে না। প্রতিটি স্কুলে গিয়ে যদি সেই সকল শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা প্রদান করার ব্যাপারের তিনি সহযোগীতা করবেন।
সভাপতির বক্তব্যের হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি আ.স.ম আব্দুর রব বলেন, আমরা তৈরি করেছি কিন্তু হাসপাতালটি আপনাদের। এটি রক্ষার দায়িত্বও আপনাদের। আমাদের প্রস্তাবনায় ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল রয়েছে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা রাখছি। হাসপাতালের আশে পাশের ৫ কিলো মিটার এলাকায় বসবাসকারী সকলেই বারাকাহ হাসপাতালের রেজিস্ট্রার পেসেন্ট হবে। যাতে করে আপনাদের শিশুদের কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদের কল সেন্টারের ডাক্তারদের ফোন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং সমস্যা বলে সেবা নিতে পারেন। এ ছাড়াও প্রতিটি স্কুলকে স্বাস্থ্য সেবার আওতায় আনার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। তবে এসব কিছুতে আপনাদের স্থানীয় জনগনের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে ১০০ ভাগ। বারাকাহর দায়িত্ব আপনাদেরকেই নিতে হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাক্তার মো: রফিকুল ইসলাম, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবুল কালাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম, ২৫,২৬,২৭নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর ইফাহ জাহান মায়া, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ প্রমুখ।