বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
প্রেমের ফাঁদে ফেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে এক কিশোরীকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই কিশোরীকে ঝিনাইদাহের বর্ডার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পাচারকারী দুই যুবককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বুধবার (১০ আগস্ট) পাচারকারীদের নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানালে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রাতে উদ্ধার হওয়া কিশোরীসহ আটকদের গ্রেফতার করে ফতুলা থানায় নিয়ে আসা হয়।
এর আগে, সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর থানার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধারসহ দুই মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়। রোববার (৭ আগস্ট) রাতে ওই কিশোরীর বাবা সোহেল বাদী হয়ে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
দুই পাচারকারী হলেন- মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর থানার ভীটু হোগলা কান্দির মোক্তার হোসেনের ছেলে হাসান ও চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার গোয়ালঘরের শাহজাহানের ছেলে শামিম ওরফে রাকিব। তারা উভয়েই উদ্ধার হওয়া কিশোরীর প্রেমিক রনির সহোযোগী। আর উদ্ধার হওয়া কিশোরী দক্ষিণ সস্তাপুর এলকার এবলুম গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।
ওই কিশোরী জানায়, সে গত এক বছর ধরে এবলুম গার্মেন্টসে চাকরি করছে। অপরদিকে রনি ছয় মাস আগে চাকরিতে যোগদান করেন এবং সস্তাপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। উভয়ে একই গার্মেন্টেসে চাকরি করার সুবাদে রনির সঙ্গে পাঁচ মাস আগে তার (কিশোরী) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের পরিকল্পনা থাকে গার্মেন্টস থেকে বেতন পেয়ে তারা পালিয়ে যাবে। রনি তখন কিশোরীকে জানায় তার বন্ধু হাসান তাকে গার্মেন্টসের সামনে থেকে নিয়ে যাবে। সে মোতাবেক ৭ আগস্ট রাতে বেতন পেয়ে কিশোরী গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে হাসানের সঙ্গে রিকশায় করে রনির কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়।
অতঃপর রিকশা ছেড়ে সিএনজি নেয় তারা। পথিমধ্যে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় শামিম ওরফে রাকিব নামক হাসানের পরিচিত এক সহোযোগী। তারা তখন বাসে চড়ে চলে যায় সীমান্তবর্তী এলাকায়। সেখানে তারা দুপুর দুইটার দিকে বিজিবির হাতে আটক হয়। আটক হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সে (কিশোরী) বুঝতে পারেনি তাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে রনি মানব পাচারকারী চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনেয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, মেয়েটি প্রেমিক রনির কথায় বিশ্বাস করে ৭ আগস্ট গার্মেন্টস থেকে বের হয়ে পরিকল্পনানুযায়ী হাসানের সঙ্গে দেখা করে। হাসান তখন নিয়ে যায় শামিম ওরফে রাকিবের কাছে। সেখান থেকে তারা বাসে করে যায় বর্ডার এলাকায়। তাদের গতিবিধি সন্দেহ হলে ৮ আগস্ট তাদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে থানা পুলিশকে জানালে তারা কিশোরীসহ পাচারাকারী হাসান ও শামিম ওরফে রাকিবকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
তিনি আরো বলেন, কিশোরীর প্রেমিক মূল হোতা রনিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, মেয়েটিকে পাচারের উদ্দশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিজিবি সহায়তায় মেয়েটিকে উদ্ধারসহ পাচারকারী চক্রের দু’সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।