বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হৃদয় মিয়া নামে অটোচালকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুইজনকে আটক করেছে র্যাব। রোববার গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও রূপগঞ্জের ব্রাক্ষণখালী এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১’র সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর পাশা এ তথ্য জানান।
এ র্যাব কর্মকর্তা জানান, গত ৮ অক্টোবর সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানাধীন পূর্বাচল নতুন শহরের ৭ নম্বর সেক্টরের ২১৯ নম্বর রোড়ে ১৪২/এ বাড়ির উত্তর পাশে ফাঁকা রাস্তায় এক ব্যক্তির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে পরিচয় শনাক্তের জন্য লাশের ছবিটি ফেসবুকে প্রকাশ করে পুলিশ।
পরে দুপুরে ফেসবুকের মাধ্যমে লাশের ছবি দেখে উপজেলার ভোলাব ইউনিয়নের টাওরা এলাকার মো. দুখাই মিয়া নামে এক ব্যক্তি লাশ দেখে শনাক্ত করে জানায় লাশটি তার ছেলে হৃদয় মিয়ার। এ ঘটনায় মো. দুখাই মিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল রোববার গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও রূপগঞ্জের ব্রাক্ষণখালী এলাকা থেকে রূপগঞ্জে দড়িগুতিয়াবো এলাকার মনিরের ছেলে আশিক ও পার্শ্ববর্তী পলখান এলাকার আক্তারুজ্জামানের ছেলে রমজান মিয়াকে আটক করে। এ সময় ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মো. সবুজ নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে নিয়মিত মাদক ক্রয় ও সেবন করত আশিক। একপর্যায়ে মাদক সেবন ও অন্যান্য কাজে আশিকের অর্থের প্রয়োজন হলে সে সবুজের কাছে টাকা ধার চায়। তখন সবুজ অটোচালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করার বুদ্ধি দেয় এবং বলে যে পেছন থেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে অথবা গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করলে চালক কোনোভাবেই প্রতিহত করতে পারবে না।
এছাড়া সবুজ আশিককে রমজানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং বলে যে ছিনতাইকৃত অটোরিকশা রমজানের কাছে নিয়ে আসলে সে বিক্রি করে টাকার ব্যবস্থা করে দেবে। তারপর আশিক অটোরিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে গত ৭ অক্টোবর রূপগঞ্জ থানাধীন ডাঙ্গা বাজার থেকে ২০ টাকা দিয়ে একটি ছুরি কিনে। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী একই বাজার থেকে একই দিন আনুমানিক বিকেল ৪টায় হৃদয় মিয়ার অটোরিকশা ভাড়া করে।
এরপর আশিক কৌশলে হৃদয় মিয়ার অটোরিকশা নিয়ে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টায় রূপগঞ্জ থানাধীন পূর্বাচল এলাকায় যায় এবং পেছন থেকে আশিক তার সঙ্গে থাকা গামছা দিয়ে হৃদয় মিয়ার গলায় পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে আশিক হত্যার উদ্দেশ্যে তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে হৃদয় মিয়ার গলায় আঘাত করে এবং গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর আশিক ভিকটিমের অটোরিকশা চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী মো. সবুজের নির্দেশনা অনুযায়ী বিক্রির উদ্দেশ্যে গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানাধীন পাগুরা এলাকায় যায় এবং সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য রমজানের কাছে অটোরিকশাটি রেখে আসে।
তানভীর পাশা আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকারী আশিক আরো জানায় যে, মো. সবুজ ও রমজান মিয়া আন্তজেলা অটোরিকশা চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। এ হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনাকারী ও চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য সবুজ গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আত্মগোপন করে আছে। তাকে গ্রেফতার করার জন্য র্যাব-১১ এর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটককৃত দুইজনকে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হবে।