বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অপহরণকারীদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তির ৩৯ ঘন্টা পর চিকিৎসাধিন অবস্থায় চাল ব্যবসায়ী ইব্রাহিম(৪২)এর মৃত্যু হয়েছে।
৩০ জুন বুধবার দুপুর ১টার দিকে আড়াইহাজার চৌধুরীপাড়া এলাকার আবু দাইয়ানের ৫তলা ভবনের নিচ তলার একটি কক্ষ থেকে আড়াইহাজার থানা পুলিশ হাত-পা, বুকে,কোমরে ও মুখ বাঁধা মূমূর্ষ অবস্থায় ইব্রাহিসকে উদ্ধার করে। পরে তাকে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে পঙ্গু হাসপাতালে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনষ্টিটিউট অব বার্ণ এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে সেখানে আইসিইউ বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ২ জুলাই শুক্রবার ভোররাত ৪টার দিকে চিকিৎসাধিন অবস্থায় সেখানে ইব্রাহিমের মৃত্যু হয়।
নিহত ইব্রাহিমের ভাই কাইয়ুম জানান, গত ২৯ জুন মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে উপজেলার হাইজাদী ইউনিয়নের ইলমদী কান্দাপাড়া এলাকার মোজাম্মেল এর ছেলে এনামুল মোবাইলে চাল ব্যবসায়ী ইব্রাহিমকে আড়াইহাজার বাজারে শাহজালাল মার্কেটের সামনে আসতে বলে। এনামুলের কথামত ইব্রাহিম শাহজালাল মার্কেটের সামনে আসলে এনামুল ও একই এলাকার সফিকুলের ছেলে ফেরদৌস তাকে অপহরণ করে আড়াইহাজার চৌধুরীপাড়া এলাকার আবু দাইয়ানের ৫তলা ভবনের নিচ তলায় একটি কক্ষে নিয়ে আটক করে।
ঐ কক্ষে আরো অজ্ঞাত ৬জনের সহযোগিতায় এনামুল ও ফেরদৌস ইব্রাহিমকে দুই হাত,দুই পা,কোমড়,বুকে পেটে মোটা দড়ি দিয়ে খাটের সাথে বেঁধে ফেলে। পরে তার মুখে সাদা কষ্টটেপ ও গামছা পেঁচিয়ে লাঠি দিয়ে পিটাইয়া আহত করে। এতে ইব্রাহিম অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মৃত ভেবে এনামুল সহ যুবকরা কক্ষে তালা লাগিয়ে চলে যায়। কাইয়ুম বলেন, মঙ্গলবার বিকালে ঐ কক্ষটিতে থেকে ইব্রাহিম ডাক চিৎকার করলে ঐ ভবনের পাশের ভাড়াটিয়ারা বাড়ির মালিক আবু দাইয়ান ও তার পরিবারকে ঘটনাটি জানান। বাড়ির মালিক আবু দাইয়ান অন্য ভাড়াটিয়াদের আশ্বস্ত করেন,এ কক্ষের ভাড়াটিয়ার বাবা পাগল,তাই সে চিৎকার করছে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র হতে জানাগেছে,মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির মালিক আবু দাইয়ান ও তার ছোট ছেলে বাবু কক্ষের পিছন দিক দিয়ে আটক ইব্রাহিমের সাথে কথা বলেন। ঐ সময় ইব্রাহিম তাকে মুক্ত করার জন্য আকুতি জানান কিন্তু ইব্রাহিমের আকুতিও মন গলেনি বাড়ির মালিকের। বরং বুধবার সকালে বাড়ির মালিক অপহরণকারীর বাড়িতে গিয়ে দেখা করে আসেন।
এ ঘটনাটি স্থানীয় লোকজন থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ইব্রাহিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। উদ্ধারের পর বাড়ির মালিক গা ঢাকা দেয়। একটি সূত্রে জানাগেছে,এ ক্ষটি বাড়ির মালিক কাউকেই ভাড়া দেননি। মোটা অংক্ষের টাকার বিনিময়ে পূর্ব পরিচিত অপহরণকারীদের কক্ষটি ব্যবহার করতে দেন।
অপহরণ ও আটকের ঘটনার সাথে বাড়ির মালিক আবু দাইয়ানের সম্পৃক্ততা আছে বলে স্থানীয় লোকজন সন্দেহ করছে।
এ ঘটনায় নিহত ইব্রাহিমের ছোটভাই কাইয়ুম বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি আনিসুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।