মন্তব্য প্রতিবেদন,হাবিবুর রহমান বাদল,বিজয় বার্তা ২৪
বন্দরে শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় কতিপয় বামপন্থী রাজনীতিবীদ নারায়ণগঞ্জকে অস্থির করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে নারায়ণগঞ্জবাসীর দাবি। নারায়ণগঞ্জবাসী মনে করে, একটি সত্য ঘটনাকে মিথ্যা বলে চালিয়ে দেয়াসহ ওসমান পরিবারকে নিয়ে আপত্তিজনক কথা বলে নারায়ণগঞ্জকে উত্তপ্ত করার জন্য ত্বকী মঞ্চের বামেরা যে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে তার সর্বশেষ সংষ্করন হলো কর্মী বিহীন রাজনৈতিকদলের নেতা ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দয়ায় নৌকা প্রতীকে এমপি হওয়া বাম নেতা ওয়ার্কস পাটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সাংসদ সেলিম ওসমানকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ স্বীকারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জবাসী চায় সেদিন বাস্তবিক কি ঘটেছিল তা উচ্চ আদালতে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হউক এবং উচ্চ আদালতও এই নির্দেশনাই দিয়েছেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের বিষয়টি এড়িয়ে রাশেদ খাঁন মেনন ও ফজলে হাসান বাদশা বিবৃতি দিয়ে সাংসদ সেলিম ওসমানকে গ্রেফতার করার যে দাবি জানিয়েছে তাতে নারায়ণগঞ্জবাসী তথা ধর্মপ্রান মুসলমানরা ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জকে অস্তিতিশীল করার জন্য এবং বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এই বিবৃতি দেয়া হয়েছে বলে নারায়ণগঞ্জবাসী মনে করে। কারন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী ও তদন্ত কমিটি যাদের সাথে আলাপ করেছে সর্বত্রই ইসলাম অবমাননার কথাটি বলা হয়েছে। যদিও রহস্যজনক কারনে তদন্ত কমিটি উচ্চ আদালতে ইসলাম অবমাননার কথাটি ও ছাত্রকে মারধরের বিষয়টি উল্লেখ না করে মণগড়া একটি তদন্ত রিপোর্ট উচ্চ আদালতে পেশ করায় আদালত আগামি ৮জুন পূনরায় প্রকৃত ঘটনা স্ববিস্তারে দাখিল করার নির্দেশণা দিয়েছেন। ইসলাম অবমাননা, ছাত্রকে বেধরক পিটুনি ও শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের টেলিফোনে কোটি টাকা দাবির অডিও ও ভিডিও আমাদের কাছে রক্ষিত রয়েছে। সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্য বামেরা নারায়ণগঞ্জকে অস্থিতিশীল করার যে পায়তারা শুরু করেছে তা নিরসনে এখনি প্রধানমন্ত্রীর জরুরী বলে নারায়ণগঞ্জবাসী মনে করে।
জানা যায়, শিক্ষক লাঞ্ছিত টনাকে কেন্দ্র করে ওসমান পরিবারে দুই সাংসদ সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান যখন অনেকটা অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে তখন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভি অনেকটা ফুরফুর মেজাজে দিন কাটাচ্ছে বলে তার অনুসারিরা মন্তব্য করেছে। শিক্ষক লাঞ্ছিত ঘটনায় মেয়র আইভি প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে কোন প্রকার মন্তব্য কিংবা ভূমিকা না রাখলেও তার অন্ধভক্ত হিসেবে পরিচিত বাম নেতারা বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে ত্বকীমঞ্চ ও কথিত আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর কিছু নেতা প্রকাশ্যেই ওসমান পরিবারকে কাবু করার জন্য বিভিন্ন ভাবে কাজ করে দিয়েছে তা প্রতীয়মান নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে। গত ১৩ মে ঘটনা ঘটার পরই নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ত্বকী মঞ্চের কতিপয় নেতা শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে এ ব্যাপারে অনঢ় থাকার পরামর্শ দিয়ে তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এর পর থেকে ত্বকী মঞ্চের বামেরা বিভিন্ন স্থানে একাধিক কর্মসূচী পালনসহ প্রকাশ্যে সাংসদ সেলিম ওসমান ও তার অনুসারিদের গণপিটুনির দেওয়ার ঘোষনা দেন। যদিও ত্বকী মঞ্চের এই সব নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর সাথে কোন কথাবার্তা না বলে তদন্ত ছাড়াই এক পেশিয়া বক্তব্য রাখতে থাকে। কিন্তু ঘটনা তদন্তে দেখা যায়, শিক্ষক শ্যামল কান্তি ছাত্র রিফাতকে শুধু মারধর করেনি ইসলাম সম্পর্কে কটুক্তি করেছে। পরবর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি ও স্থানীয় ভাবে গঠিত তদন্ত কমিটি উভয়ে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ইসলাম সম্পর্কে ৮ মে কটুক্তি করেছিল তার প্রমাণ পায়। ২৬ জন ছাত্রের সাথে তদন্ত কমিটি আলপ করলে ২০ জন ছাত্র বলে, ছাত্র রিফাতকে মারধর কালে সে যখন আল্লাহু করে চিতকার করছিল তখন শিক্ষক শ্যামল কান্তি বলে ওঠে তোরাও নাপাক তোদের আল্লাহ্ও নাপাক ( নাউজুবিল্লাহ্)। এঘটনার জানাযানি হয়ে পড়লে ৮ মে উত্তেজিত গ্রামবাসী সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে স্কুলে প্রবেশ করে মারধর করে। কয়েক ঘন্টা পর জুম্মার নামাজ এমত অবস্থায় পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারতো। কিন্তু বন্দরের ইউএনও, ওসিসহ পর্যাপ্ত পুলিশ থাকা সত্ত্বেও রহস্য জনক কারণে স্কুল শিক্ষককে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার ব্যবস্থা না করে রহস্যজনক কারণে সাংসদ ওেসলিম ওসমানের উপদেষ্টাসহ বন্দরের প্রশাসন শিক্ষককে নিয়ে বিকাল পর্যন্ত বসে থেকে এবং সাংসদ সেলিম ওসমানকে ঘটনাস্থল যেতে বাধ্য করে। ততক্ষনে কয়েক হাজার গ্রামবাসী শিক্ষককে ঘেড়াও করে রেখেছে। এ অবস্থা থেকে শিক্ষককে রক্ষার জন্য সেলিম ওসমানের ভাষায় শিক্ষক শ্যামল কান্তির প্রস্তাবেই তাকে উঠবসের ব্যবস্তা করে এবং গ্রামবাসীকে শান্ত করার জন্য সাংসদ সেলিম ওসমান হাত নেড়ে গুনে। এসময় নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর স্লোগান দেয় গ্রামবাসী। পরে গ্রামবাসীকে শান্ত করে পুলিশ হস্তক্ষেপে শ্যামল কান্তিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পরবর্তিতে তদন্ত কমিটি আদালতে এবিষয়টি রহস্যজনক কারণে তুলে ধরেনি। এমনকি তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই শিক্ষা মন্ত্রী মিডিয়ায় বলে দিলেন ইসলাম ধর্মকে কটুক্তি করাতম কোন তথ্য তারা পাননি। অথচ ২০ মে হাজার হাজার মুসল্লিার সামনে রিফাত ঘটনা বর্নণা দিয়ে ইসলামকে কটুক্তি করা কথা বললেও তদন্ত কমিটি তা আমলে নেয়নি বরং সাংসদ সেলিম ওসমানের এঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য কতিপয় মিডিয়া সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে মনগড়া কল্পকাহিনীসহ রিফাতের বক্তব্য ও ঘটনার স্লোগান পাল্টে ২০ মে ধর্ম প্রাণ মুসল্লিদের সমাবেশকে হেফাজতের সমাবেশ বলে অপপ্রচার শুরু করে। এবিষয়টি খোলাশা করার জন্য সাংসদ সেলিম ওসমান পর পর দুই বার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হলেও উচ্চ আদালত পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায়। এদিকে সাংসদ সেলিম ওসমানের কয়েকজন মিডিয়া উপদেষ্টাদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোধ নগরবাসীর মধ্যে রয়েছে নানা জল্পনা কল্পনা। শুধু তাই নয় এই ইস্যু নিয়ে সাংসদ শামীম ওসমান সম্পূর্ণ নিচ্চুপ থাকার পরও একাধিক মিডিয়া সেলিম ওসমানের সাথে শামীম ওসমানকেও জড়িয়ে ফেলেছেন। এদিকে শ্যামল কান্তি ভক্তের ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে মাঠ গরম রাখতে ত্বকী মঞ্চ ও আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’র নেতারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে ঈদের পর থেকে মাঠে নামবে বলেও জানা যায়। তারা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠ গরম রাখতে চান বলে সূত্রটি দাবী করে। এক্ষেত্রে সূত্রটির মতে অর্থ কোন ব্যাপার না, ওসমান ভ্রাতৃদ্বয়ের দম্ভ ও অহংকার ভাঙ্গতে ঈদের পর একের পর এক কর্মসূচী চালাবে কথিত বামপন্থিরা। সূত্রটির দাবী ইতিমধ্যেই ওসমান পরিবারের ঘনিষ্ট কিছু রাজনৈতিক নেতা ও মিডিয়া কর্মী তাদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন। যে কারণে আগামী নির্বাচনে সকল প্রস্ততি গ্রহনসহ নির্বাচনী পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। মেয়র আইভিও শিক্ষক ইস্যুতে ওসমান পরিবারের অস্বস্তিকর অবস্তায় এখন অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছে।
হাবিবুর রহমান বাদল
সম্পাদক ও প্রকাশক দৈনিক ডান্ডিবার্তা
সাবেক সভাপতি নারায়ণগঞ্জ নিউজ পেপারর্স ওর্নাস এসোসিয়েশন