স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা চলবে-এই মর্মে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বুধবার প্রকাশ পেয়েছে।
বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করে। রায় প্রকাশের ফলে ৬০ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে বলে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের দেয়া রায়ের নয় মাসের মাথায় পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ পেল।ঢাকার বিশেষ জজ-৯ আমিনুল ইসলামের আদালতে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। আগামী ১২ জুন অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মোহম্মদ নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি খারিজ করে স্থগিতাদেশ তুলে নিয়েছিলেন।
জরুরি অবস্থার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের করা এই মামলা বাতিলের জন্য খালেদার রিট আবেদনে সাত বছর আগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট।সে সময় জারি করা রুল খারিজ করে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের হাই কোর্ট বেঞ্চ ১৭ সেপ্টেম্বর এই রায় দেয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়।
খালেদা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার।
সাত বছর পর গত বছরের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাই কোর্টের দেওয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত বছরের ৩০ আগস্ট আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার রগীব রউফ চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এই দুর্নীতি মামলা নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের করা দুটি আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায়। এই দুই জামায়াত নেতাই সে সময় খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন।