বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নিজের অপরাধ আড়াল করতে এসআই মিজানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়াটার্সে অভিযোগ করলেন আসামী আমির নিজেই।
সম্প্রতি এম এস নিউ ফ্যাশনের মালিক মো. কামাল তার ৩২ লাখ টাকার মালামাল চুরির অভিযোগে ফতুল্লা মডেল খানায় রশিদ নামে এক ব্যক্তির নামে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৯। রশিদকে গ্রেফতারের পর তার জবানবন্দী ও সিসি টিভির ফুটেজে চুরির প্রমানের ভিত্তিতে আমির হোসেন বাদশা নামে একজকে গ্রেফতার করা হয়। আমিরের তথ্যেের ভিত্তিতে ঢাকার আশুলিয়ায় একটি পরিত্যক্ত গোডাউন থেকে চুরিকত মালের অর্ধেক মাল উদ্ধার করা হয়। পরে মামলা থেকে বাঁচতে ১৮ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমানের নামে হেড কোয়াটার্সে একটি অভিযোগ দায়ের করেন আসামী আমির।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী কামাল জানান, আমার এম এস নিউ ফ্যাশনের ১০ হাজার ৫০০ পিছ মাল যার মূল ৩২ লাখ টাকা। সাইনবোর্ডের গিরিধারা এলাকায় রশিদের মালিকানাধীন সৃষ্টি গার্মেন্টেসে ৩ জুলাই মালগুলো ফিনিংস করার কাজে দেই। কিন্তু ৫ জুলাই আমার গার্মেন্টসের কর্মচারীকে মালগুলো দেখার যান পাঠালে রশিদের প্রতিষ্ঠানে তালা লাগানো দেখে। পরে রশিদের সাথে যোগাযোগ করে না পেলে আমি ৭ জুলাই ফতুল্লা মডেল থানায় রশিদ সহ তার সাথের কয়েকজনের নামে একটি মামলা দায়ের করি। রশিদ চাঁদপুরে পালিয়ে আছে এমন তথ্য পেয়ে আমার লোকজন তাকে থোজতে চাঁদপুরে গেলে তাকে খোঁজে পায় । এরপর চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ রশিদকে গ্রেফতার করে। পরে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে ফরিদগঞ্জ থানা থেকে রশিদকে আনা হয়। গ্রেফতারের পরে রশিদ বলেন মালগুলো আমির হোসেন বাদশা নিয়ে গেছে। ওকে তারাতারি গ্রেফতার করেন না হলে মাল আর ফেরত পাবেন না। রশিদের তথ্য মতে আর সিসিটিভির ফুটেজে আমির রশিদের এথানে মাল নিয়ে যাচ্ছে তথ্যের ভিত্তিতে আমিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর আমিরের তথ্যে ভিত্তিতে আশুলিয়া থেকে আমার চুরিকৃত মালের ৬ হাজার ৭ পিছ মাল উদ্ধার করে ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজান। রশিদ ও আমিরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আমির ও রশিদ জামিন নিয়ে বের হয়। আমার পুরা মালমাল এখনো উদ্ধার হয়নি। আমির নিজেকে মামলা থেকে বাদ দিতে এখন এসআই মিজানের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে। মূলত আমির একজন চিহ্নিত প্রতারক। সে আগেও অনেকের সাথে এমন প্রতারনা করেছে।
রশিদ পুলিশের কাছে গ্রেফতারের পর জানান, এমএস গার্মেন্টসের মালগুলো আমার গার্মেন্টেসে ফিনিসিং করার জন্য দেওয়া হয়। আমি আমিরের প্রলোভনে মালগুলো আমিরকে তাকে দিয়ে দেই। আমির আমাকে বলেছিল মালগুলো তাকে দিলে পুলিশের ঝামেলাসহ সব কিছু সে দেখবে। আমি তার প্রলোভনে গভীর রাতে আমির আনা পিক্যাপভ্যানে দাড়িয়ে থেকে উঠিয়ে দেই। এখন মালগুলো আমিরের কাছে আছে। মামলা হওয়ার পরে আমি যখন আমিরের সাথে যোগাযোগ করি তখন সে আমাকে একটু দূরে হাইড থাকতে বলে বাকি বিষয়টি সে দেখবে বলে জানায়। আমিরকে গ্রেফতার না করলে মালামাল উদ্ধার হবে না বলে জানায় রশিদ।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, মামলার প্রেক্ষিতে আমি আসামি রশিদকে আমার হেফাজতে চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ থানা থেকে নিজ হেফাজতে ফতুল্লা মডেল থানায় নিয়ে আসি। এরপর রশিদের তথ্যের ভিত্তিতে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ আমির হোসেন বাদশাকে গ্রেফতার করেন। আমিরের স্বীকারোক্তিতে ঢাকা আশুলিয়া একটি পরিত্যক্ত গোডাউন থেকে চুরিকৃত মালের ৬ হাজার ৭০০ পিছ মাল উদ্ধার করি। রশিদ ও আমিরের নামে রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করি। আদালত রিমান্ড না মঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। পরে বাকি মালমাল উদ্ধারের জন্য তাদের বিরুদ্ধে আবার আদালতে রিমান্ড আবেদন করি। আদালত রিমান্ড না মঞ্জুর করে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ ঘটনায় সাইনবোর্ড এলাকার এক নেতা আমির পক্ষ নিয়ে আমাকে টাকার বিনিময়ে আমির নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার কথা প্রস্তাব দেন। আমি রাজি হইনি। আমির বিভিন্ন লোক মারফত আমাকে বলে আমি যদি মামলা থেকে তার নাম বাদ না দেই। আমার নামে হেড কোয়ার্টাসে অভিযোগ করবেন। প্রকৃতপক্ষে আমিরের প্রসঙ্গে খোজ নিয়ে জানা গেছে আমির একজন প্রতারক শ্রেনীর লোক। সে বিভিন্ন জায়গায় অনেক লোকের সাথে এমন প্রতারণা করে আসছে।