ঝিনাইদহ,বিজয় বার্তা ২৪
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় বন্ধ হওয়া ক্লিনিকগুলো আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে বন্ধ ক্লিনিকগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় চালু করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি মহেশপুর উপজেলার ভৈরবা বাজারের জননী ক্লিনিকে ১০ জন প্রসুতি মা সিজারিয়ান অপারেশনের পর মৃত্যু বরণ করেন।
এ ঘটনার পর ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টম্বর ভ্রাম্যমান আদালত মহেশপুর উপজেলায় কাগজপত্র বিহীন ক্লিনিক গুলো জরিমানাসহ সিলগালা করে দেয়। অভিযোগ উঠেছে সিভিল সার্জন অফিসের অসাধু চক্র মোটা অংকের টাকা নিয়ে বন্ধ করা ক্লিনিকগুলো বেনামে খুলে দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। ফলে রাতারাতি সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে অন্য নামে ক্লিনিক ব্যবসা শুরু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে,
ভ্রাম্যমান আদালত খালিশপুর বাজারে অবস্থিত লালন শাহ ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে জরিমানা সহ সিলগালা করে দেয়। ক্লিনিক মালিক আব্দুল হামিদ গত গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর আর ক্লিনিক ব্যবসা করবেন না বলে মুচলেকা দেন। এরপর তিনি ক্লিনিকে থাকা সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে জেলা প্রসাশকের কাছে লিখিত আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক সেই আবেদনও মঞ্জুর করেন। এ ঘটনার পর শুরু হয় নতুন করে খেলা। কিছু দিন পর লালন শাহ ক্লিনিকের স্থানে ঝুলানো হয় আব্দুল আজিজ প্রাইভেট হাসপাতালের সাইনবোর্ড। এই নামেই এখন চালানো হচ্ছে ক্লিনিক ব্যবসা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,
আব্দুল আজিজ প্রাইভেট হাসপাতালের মালিকও সেই আব্দুল হামিন। আব্দুল আজিজ প্রাইভেট হাসপাতালটি শৈলকুপায় পরিচালিত হতো। সেখানে অপচিকিৎসাসহ নানাবিধ অনিয়মের কারণে ক্লিনিকটি বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে আব্দুল হামিদ ক্লিনিকের নাম বদলের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লালন শাহ ক্লিনিক সিলগালা হয়ে যাওয়ায় তিনি শৈলকূপা থেকে আব্দুল আজিজ প্রাইভেট হাসপাতালের লাইন্সেস কিনে নিয়েছেন। তিনি আর ক্লিনিক ব্যবসা করবেন না এমন মুচলেকা দেওয়ার কথাও স্বীকার করে আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, এ ছাড়া আর সহজ ব্যবসা কি আছে ?
অভিযোগ পাওয়া গেছে ঝিনাইদহ জেলার আনাচে কানাচে শতাধীক ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ চিকিৎসার কোন পরিবেশ নেই। সর্বক্ষনিক ডাক্তার ও প্রশিক্ষিত নার্স থাকে না। নোংরা অপারেশন থিয়েটারে অপারেশ করার কারণে জীবনু আক্রান্ত হয়ে প্রসুতি ও শিশুরা মারা যাচ্ছে। গত বছরে জেলায় প্রায় ৫০ জন মা ও শিশু এ ভাবে মৃত্যু বরণ করেছেন। সেবার পরিবর্তে এ সব ক্লিনিকে গলাকাটা বিল আদায় করা হয়।
ক্লিনিকগুলোতে অপচিকিৎসায় অহরহ মানুষ মৃত্যু বরণ করলেও সিভিল সার্জন অফিসের কোন মাথা ব্যাথা নেই। নামমাত্র তদন্ত করে টাকার বিনিময়ে ক্লিনিক মালিকদের রেহায় দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম জানান,
নতুন করে নবায়ন করে একজন অন্য নামে ক্লিনিক ব্যবসা চালাতে পারে। তিনি জানান, শৈলকুপার আব্দুল আজিজ ক্লিনিক মহেশপুরে পরিচালনার একটি আবেদন পেয়েছি। সেটা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।