স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের বিধান রেখে ‘বৈদেশিক অনুদান স্বেচ্ছাসেবকমূলক কার্যক্রম রেগুলেশন বিল-২০১৬’ চূড়ান্ত করেছে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিলটি চূড়ান্ত করা হয়। বিলে কোনো এনজিও বা এনজিও কর্মকর্তা সংবিধান বা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে অশোভন মন্তব্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে।
বৈঠক শেষে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেসব্রিফিংয়ে কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘সংবিধান বা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা যাবে না। কোনো এনজিও সেটা করতে পারবে না। কেউ সংবিধান বা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে অশালীন বা অশোভন মন্তব্য করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার চাইলে ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
এই বিল পাস হলে টিআইবিসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো সংবিধান বা বিচার বিভাগ নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ দিতে পারবে কিনা জানতে চাইলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সমালোচনা করা যাবে, তবে গালি-গালাজ করা যাবে না। পারলামেন্ট সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাকে সম্মান দিতে হবে। মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, টিআইবি আমার কাছে আসছিল। আমি বলেছিলাম ক্ষমা চাইতে। কিন্তু তারা আর এলো না।
তিনি বলেন, সংসদ নিয়ে মন্তব্য করেন। কিন্তু পুতুল নাচের নাট্যশালা তো বলতে পারে না। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। তাই সংবিধান বা সাংবিধান প্রতিষ্ঠান নিয়ে যা ইচ্ছে তাই মন্তব্য করা যাবে না।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আবদুল মতিন খসরু, বেগম সাহারা খাতুন, মো. শামসুল হক টুকু, তালুকদার মো. ইউনুস, অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা ও সফুরা বেগম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রেবেকা মমিন ও সাব-কমিটির সদস্য হুইপ মোছা. মাহবুব আরা বেগম গিনি এবং বিভিন্ন এনজিও এর প্রতিনিধিগণ।
প্রসঙ্গত, এনজিও কার্যক্রম বর্তমানে পরিচালিত হয় ১৯৭৮ ও ১৯৮২ সালের দুটি অধ্যাদেশ দিয়ে। সামরিক শাসনামলের অধ্যাদেশ দুটি একত্রে করে নতুন আইন করতে বিলটি উত্থাপন করা হয়। পরে তা অধিকতর পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলটি উত্থাপনের পর থেকেই এই বিলের একাধিক ধারা নিয়ে আপত্তি জানায় বেসরকারি সংস্থাগুলো। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করে সংসদীয় কমিটি। সর্বশেষ বৈঠকে বিলটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।