নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
বন্দর উপজেলায় আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বন্দরের শান্তিপূর্ন বজায় রাখতে সকল দলের নেতৃবৃন্দ এলাকাবাসী সহ সকলের প্রতি আহবান রেখেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি বলেছেন, নির্বাচনে কোন অবস্থাতেই যেন ভোট নিয়ে কোন সন্ত্রাসী না হয়, কোন রক্তপাত না হয় নির্বাচন যেন নিরপেক্ষ হয়। নির্বাচন নিয়ে কোন অবস্থাতেই এলাকার শান্তি নষ্ট করা যাবে না।
রোববার ৮ মে সকাল ১০টায় বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নের বার পাড়া এলাকায় জহরপুর আলফাতাহ্ দারুল উলুম হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও এতিম খানার দ্বিতীয় তলা ভবনের ছাদ ঢালাই কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।
মাদ্রাসাটিতে দ্বিতল ভবন নির্মানের জন্য মাদ্রাসার শিশু ছাত্র আবু সাঈদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ ডিসেম্বর মাদ্রাসার দ্বিতীয় তলা নির্মানের জন্য সেলিম ওসমান তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকার অনুদান প্রদান করেন সেই সাথে শিশু আবু সাঈদকে তার সাথে করে পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন। সেলিম ওসমানের দেওয়া অনুদানের ১০ লাখ টাকায় মাদ্রাসার ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই কাজ মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হয়। মাদ্রাসাটির জন্য তিনি আরও ১০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।
সেলিম ওসমান তার বক্তব্যে আরও বলেন, যারা গুজব ছড়িয়ে থাকে তারা শয়তানের বন্ধু। আমি আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আপনাদের গোলামি করছি। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর সব দলের লোক নিয়ে কাজ করছি। বন্দরে আমার ৩ জন উপদেষ্টার মধ্যে ১ জন জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ১ জন থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আরেকজন বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান যিনি বিএনপি করেন। আমি সবাইকে সাথে নিয়ে সবার জন্য কাজ করি।
সেলিম ওসমান আক্ষেপ করে বলেন, যাদের বাড়িতে আওয়ামীলীগের জন্ম। যার রক্তে প্রতি শিরায় বঙ্গবন্ধু, হৃদপৃন্ডে শেখ হাসিনার নাম যার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগ পরিবার। তার সাথে আওয়ামীলীগের নেতাদের রেশারেশি লজ্জা জনক ব্যাপার। জনগন আমাকে ভোট দিয়ে গোলামী করার জন্য
তিনি আরও বলেন, আগামীতে আবার সংসদ সদস্য হওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নাই। আমি আপনাদের কাছে ভোট চাই না। আমি আপনাদের ভালোবাসা চাই। আমি চাই আমার পরিবর্তে যিনি আসবেন সে আমাদের পরিবার থেকে হোক আর অন্য কেউ হোক তাকেও যেন আপনারা ভালোবাসতে পারেন। তাকে আপনাদের তৈরি করতে হবে।
বন্দরবাসীর প্রতি আহবান রেখে তিনি বলেন, আসছে পবিত্র রমজানের মাসের পূর্বে আপনারা চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য ভোট প্রদান করবেন। আপনাদের পবিত্র ভোটের মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিকে আপনাদের আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য নির্বাচিত করবেন। যারা আমার মত আমার সাথে আপনাদের গোলামী করবে। কোন অবস্থাতেই আপনারা বিভ্রান্ত হবে না।
জামায়াতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ৭৫’র পর মিথ্যা ইতিহাস দিয়ে যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে চেয়েছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। বন্দরের মানুষ জেগে উঠেছে। যারা ৭৫’র এর সাবালক হয়ে মিথ্যা ইতিহাস জেনে জামায়াত করেছে আমি তাদের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। ভন্ড ইতিহাস ভূলে আসেন দেশের উন্নয়নে কাজ করেন। বন্দরের মানুষ বন্দরে কোন মাদক সেবী আর জামায়াত থাকতে দিবে না। পাশাপাশি বন্দরের মানুষের প্রতি আহবান রেখে বলেন, আমরা দাড়ি রাখবো টুপি পড়বো নবীজির সুন্নত রাখবো কিন্তু কেউ জামায়াত বানিয়ে দিবেন না। প্রতিটি মসজিদের ইমাম সাহেবেরা এ বিষয়ে দায়িত্ব নিবেন। জুম্মার নামাজের পর সত্য ইসলামের কথা বলেন।
জামায়াতের হরতাল সম্পর্কে তিনি বলেন, আজকে সকালে আমি ঢাকা থেকে এখানে এসেছি রাস্তায় একটি পুলিশও চোখে পড়ে নাই। আজ নাকি হরতাল। দেশের মানুষ এখন আর জঙ্গীদের হরতাল মানে না।
জেলা জাতীয় আহবায়ক আবুল জাহের বলেন, সেলিম ওসমান গত দুই বছরে বন্দরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। উনি কোন দল দেখেন নাই। যেখানে উন্নয়ন সেখানেই তিনি আছেন। উনার মত একজন সংসদ সদস্য বাংলাদেশে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। উনি শুধু দিতে জানেন নিতে জানেন না।
মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কালাম, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, শামসুজ্জোহা বিএম ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুহি উদ্দিন মহিন, শিহাব উদ্দিন মেম্বার, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু নাঈম, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু জাফর, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন প্রমুখ।