স্টাফ রিপোর্টা্র,বিজয় বার্তা ২৪
বিশ্বকবি বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে উল্লেখ করেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল, উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর সাহিত্য সম্ভার যেমন বিশাল তেমনি বর্ণাঢ্য। তাঁর কালজয়ী লেখায় একদিকে ঋদ্ধ হয়েছে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, অন্যদিকে তা বিশ্বসাহিত্যের অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়েছে আপন বৈভব, আঙ্গিক, বহুমাত্রিকতায়।
কবির মানসপটে ছিল শিল্পের পরিশীলিত আবহ, প্রকৃতি, প্রেম, আধ্যাত্মিকতা এবং তাতে সম্মিলন ঘটে বিশ্বসভ্যতা, দর্শন ও বিজ্ঞান। রবীন্দ্রনাথ পারিপার্শ্বিক সবকিছুকে আত্মস্থ করেছেন গভীর উপলব্ধিতে এবং এর সার্থক বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন তাঁর কালোত্তীর্ণ সাহিত্যকর্মে।
তিনি একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ-সংস্কারক। রবীন্দ্রনাথ কেবল তাঁর কালের কবি নন, তিনি কালজয়ী। তিনি বাংলা সাহিত্যকে পূর্ণতা দিয়েছেন, দিয়েছেন বিশ্বসমাজে উচ্চ প্রতিষ্ঠা ও মর্যাদা। শিল্প-সাহিত্যে তাঁর বিপুল অবদান আমাদের সাংস্কৃতিক সত্তার এক অপরিহার্য অংশ।
রবীন্দ্রনাথের বিশালতা এবং তাঁর সৃষ্টির অপূর্ব মাধুর্যকে অন্তরাত্মা দিয়ে উপলব্ধি করতে হলে রবীন্দ্রচর্চার বিকল্প নেই। আমি আশা করব জগৎ-সংসারকে গভীরভাবে জানতে তরুণ প্রজন্ম রবীন্দ্র সাহিত্যে অবগাহন করবে, রবীন্দ্রচর্চায় থাকবে ব্যাপৃত।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে উল্লেখ করেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির শৈল্পিক অহঙ্কারের এক বিশ্বব্যাপ্ত নাম। তিনি নিজের সমৃদ্ধ সাহিত্যচর্চার পরিধি দিয়ে বিস্তৃত করেছেন গোটা বাংলা সাহিত্যের পরিসর। তিনি বিশ্বসাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। কালজয়ী এ কবি জীবন ও জগৎকে দেখেছেন অত্যন্ত গভীরভাবে যা তাঁর কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, গীতিনাট্য, প্রবন্ধ ও ভ্রমণ কাহিনী, সঙ্গীত ও চিত্রকলায় সহ¯্রধারায় উৎসারিত হয়েছে।
সাহিত্য, সঙ্গীত ও শিল্পমাধ্যমের প্রতিটি শাখায় তাঁর অনায়াস বিচরণ সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি ছিলেন শান্তির কবি, মানবতার কবি। তিনি ছিলেন প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের সাধক। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করে তিনি বাংলা সাহিত্যের বৈশ্বিক অভিযাত্রাকে বেগবান করেছেন।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন প্রকৃতিলগ্ন ও জীবনমুখী শিক্ষাদর্শনের পথপ্রদর্শক। তাঁর শিক্ষাভাবনা আমাদের বিজ্ঞানভিত্তিক, আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে অনুপ্রাণিত করে। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের তিনি একান্ত আপনজন।
কবিগুরুর অমর সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ গানটি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করেন যা দেশের মানুষের মনে সঞ্চারিত করেছে দেশপ্রেমের নতুন প্রেরণা। বিশ্বব্যাপী দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও বৈষম্যের বিলোপ সাধন এবং ধর্ম-বর্ণ-ভাষার বৈচিত্র্য সমুন্নত রাখতে রবীন্দ্রনাথের জীবন ও দর্শন এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা।