বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আড়াইহাজারে সেই সাব রেজিস্ট্রার এসহাক আলী মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ২৫ মার্চ বোরবার দুপুরে ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশন (আই জি আর) খান মোঃ আব্দুল মান্নান তাকে বরখাস্ত করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্টার (ডিআর) সাবিকুন্নাহার সাব রেজিষ্টার এসহাক আলী মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, রোববার সকালেই সাব রেজিষ্টার এসহাক আলী মন্ডলকে আড়াইহাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে রূপগঞ্জের সাব রেজিষ্টার রেজাউল করিম বকশিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ওইদিন দুপুরে ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশন (আই জি আর) খান মোঃ আব্দুল মান্নান আড়াইহাজারে সরেজমিন পরিদর্শন আসেন এবং দলিল লিখকসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় করে ঘুষ গ্রহণের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়ে তাকে বরখাস্ত করেন।
এদিকে দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভূইয়া জানান, একজন স্থায়ী সাব রেজিষ্টার পোস্টিং দেয়ার জন্য আই জি আর এর নিকট দাবী করা হয়। তিনি তাদের দাবী দ্রুত পুরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর দলিল লিখকদের কলম বিরতির স্থগিত ঘোষনা করেন।
প্রসঙ্গত সরকারী অফিসে বসে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার এছহাক আলী মন্ডলের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ভিডিওতে দেখা যায়, টেবিলের ওপর কম্পিউটার। রয়েছে মুঠোফোন ও ফাইলের স্তুপ। প্রতিটি ফাইলে স্বাক্ষর করার আগে টাকা গুনে ড্রয়ারে রাখেন তিনি। পাশ থেকে একজন ফাইল এগিয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে একজন টাকা কম দেয়ায় টাকা ছুড়ে দিচ্ছেন। পরে আবার তার চাহিদা মত টাকা ড্রয়ারে রাখছেন। ড্রয়ারে টাকার অনেকগুলো নোট জমার পর নিজ হাতে তিনি প্যান্টের পকেটে গুজে রাখছেন। সরকারি কক্ষে বসে এভাবেই ঘুষের কারবার চালাচ্ছেন আড়াইহাজার উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার এছহাক আলী মন্ডল।
দলিল লেখক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, ব্যাংক মরগেজ চুক্তিনামা আগে কোন টাকা লাগতো না। কিন্তু সাব রেজিষ্টার এসহাক মন্ডল চুক্তিনামা সাক্ষর করতে& এখন ১০ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন। পাওয়ার, পারিবারিক বন্টন দলিলে চালান বাদে সরকারকে কোন ফি দিত হত না। কিস্তু এ সাব রেজিষ্টার এসব দলিল থেকে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ নিত। আগে হেবা দলিলে সরকারী ৬৪০ টাকা দিলে সাব রেজিস্টার সাক্ষর করতেন। এসহাক মন্ডলকে হেবা দলিলে স্বাক্ষর করাতে দুই হাজার টাকা থেকে বিশ হাজার টাকা ঘুষ নেন।। কোন দলিল লিখক ঘুষ নিয়ে তার সাথে দরকষাকষি করলে তিনি দলিল ছুড়ে ফেলে দিয়ে নানা অশালীন বাক্য প্রয়োগ করেন। তিনি আরও জানান, সপ্তাহের দুই তিন দিন অফিস করে আড়াইহাজার থেকে নয় থেকে দশ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে গেলেও তার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। তার অতিরিক্ত চাহিদার কারণে জমি বেচাকেনা কমে গেছে। সাধারণ দলিল লিখকরা দলিল করাতে না পেয়ে অন্য পেশায় যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।