স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
বিচারপতিদের পুরোপুরি ‘নিয়ন্ত্রণ ও নগ্ন আগ্রাসন’ চালাতেই তাদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে নিতে নতুন আইন পাশ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘এটি স্বাধীন বিচারকার্য পরিচালনায় বাধার সৃষ্টি করবে এবং মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হবে। এটি পাসের মাধ্যমে সরকার পুরোপুরি বিচারপতিদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিই ভীতিকর এবং চাপ সৃষ্টির জন্যই এটি করা হচ্ছে।’
বিচারপতিরা যেন সরকারের ইচ্ছামতো কাজ করে সেজন্যই এই আইন করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই আইন কার্যকর হলে ন্যায়বিচার শিকেয় উঠবে। এই আইন পাশের মাধ্যমে সরকার বিচার ব্যবস্থাকে বিরোধী দলসহ গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রে স্বীকৃত সব অধিকারকে আরো নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে সক্ষম হবে।’
ক্ষমতা নিষ্কণ্টক ও প্রতিপক্ষকে দুরমুস (দমিয়ে রাখতে) করতে অভিশংসন আইন করা হয়েছে, দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সম্প্রতি ভোটারবিহীন সরকারের তিনজন মন্ত্রী উচ্চ আদালতে দণ্ডিত হওয়ায় সরকারের মধ্যে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আর সে কারণেই তড়িঘড়ি করে বিচারপতিদের নিয়ন্ত্রণ করতেই এই নতুন আইন পাশ হতে যাচ্ছে।’
‘বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের’ এই আইন পাশ করা হলে সংবিধানের সর্বশেষ স্তম্ভটুকুও বিলীন হয়ে যাবে বলেও মনে করেন রিজভী। এই ধরনের পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই ‘জনস্বার্থ বিরোধী’ আইন পাশ করা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকে আরো বেশি মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করতে মিডিয়া মনিটরিং সেল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বুধবার জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’
তিনি বলেন, ‘এর আগে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমেও গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনকি দেশীয় গণমাধ্যমের বিকাশের নামে বিদেশি গণমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণের সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ আলামত কোনো শুভলক্ষণ নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন উর রশিদ, দপ্তর সহসম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, সাংগঠনিক সহসম্পাদক মোস্তাক মিয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য জামাল শরীফ হিরু প্রমুখ।