বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জেলার সভাপতি কমান্ডার গোপিনাথ দাস এ সময় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার কি হয়েছে । আমরা কোন একটি ঘটনার হামলা নির্যাতনের বিচার পাইনি । রংপুরে ফেইসবুকের মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতন করে তাদের বাড়িঘরে আগুন ও লুটপাট করে । আমরা বঙ্গবন্ধু কে ভালোবাসি তার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি । কিন্তু কার জন্য এদেশ স্বাধীন করলাম । বাংলাদেশ একটি সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতির দেশ । এখানে আমরা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান মুসলমান সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বসবাস করি । কিন্তু একটি কুচক্রী মহল ফেইসবুকে অপপ্রচার চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও ভাংচুর এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ চালাচ্ছে । আমরা রংপুরে এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই ।
মঙ্গলবার ( ১৪ নভেম্বর ) বিকেলে শহরের চাষাড়ায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আয়োজনে রংপুরে ফেইসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র পোষ্ট করার মিথ্যা অভিযোগে হরকলি ঠাকুরপাড়া গ্ৰামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয় ।
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কমান্ডার গোপিনাথ দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ’র সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, সাধারণ সম্পাদক নিমাই দে, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আর্চায, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম সাহা, কোষাধ্যক্ষ সুশীল দাস, প্রচার সম্পাদক তপন ঘোপ সাধু, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক রির্চাজ সৌরভ দেওড়ী,ফতুল্লা থানা কমিটির সভাপতি রঞ্জিত মন্ডল, সদর থানার সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, বন্দর থানা কমিটির সভাপতি শংকর কুমার সাহা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সভাপতি কালিপদক, সোনারগাঁ থানা কমিটির সভাপতি লোকনাথ দত্ত, আড়াইহাজার থানা কমিটির সভাপতি, হারাধন দে , সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, বন্দরে সিনিয়র সহ সভাপতি মনোরঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক রিপন দাস, জেলা শারদাঞ্জলি ফোরামের সভাপতি আশিষ কুমার দাস,জেলা জাগো হিন্দু পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ দাস কাজল, সাধারণ সম্পাদক সুজন দাস, বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি আনন্দ সোরাগী প্রমুখ ।
মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন সংহতি প্রকাশ করে বলেন, এদেশে যখনই কোন মানবিক বিপর্যয় এসেছে আমরা তাদের পাশে গিয়ে দাড়াই । রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছি । কিন্তু আজ আমাদের উপর বর্বরোচিত হামলা সরকার আজ নিশ্চুপ । এভাবে যদি হামলা ও নির্যাতন চালায় তাহলে এদেশ থেকে একদিন সংখ্যালঘু নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে । এর আগে ব্রাক্ষনবাড়িয়ার নাসিম নগরে যে হামলা হয়েছিল তার বিচার আমরা পাইনি । এভাবে হামলা চালাবে আর সাহায্য করবে আমরা তা চাই না । আমাদের মা বোনদের ইজ্জত হরণ হয় কিন্তু এই ইজ্জত ফিরে পাবো না । আমরা চাই এদেশে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাসের অধিকার । তাই এসব অপ্রীতিকর ঘটনা যে আর না ঘটে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।
মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল বলেন , আর আমরা দাঁড়াব না এখন থেকে প্রতিবাদ করবো । এদেশের এমপি মন্ত্রীরা রোহিঙ্গাদের দেখতে যায় । কিন্তু আজ আমাদের উপর নির্যাতন কেউ দেখতে যায় না । আমরা এই মানববন্ধন থেকে এর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি । এবং এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই । আর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার জোর দাবি জানাচ্ছি । তা নাহলে আমরা কঠোর কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হব ।
মানববন্ধন শেষে তারা শহরের বিক্ষোভ মিছিল বের করে । মিছিলটি চাষাড়া হতে আরম্ভ করে বিবি রোড হয়ে দুই নং রেল গেইট হয়ে উকিলপাড়ায় এসে সমাপ্ত হয় ।