নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এস আাই উত্তমের বিরুদ্ধে তার অপকর্মের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত দরখাস্ত করেছেন সকাল বার্তা প্রতিদিনের সম্পাদক প্লাবন রাজু। এছাড়া এই লিখিত দরখাস্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহা পরিদর্শক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়।
সকাল বার্তা প্রতিদিনের সম্পাদকের লিখিত দরখাস্তটি পাঠকের কাছে হুবহু তোলা ধরা হলঃ
বিষয়ঃ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এস আই উত্তম কুমার রায় কর্তৃক নিরীহ গার্মেন্টস শ্রমিক আসালাম-এর পরিবারের কাছে উৎকোচ দাবি ও টাকা না দেয়ায় মিথ্যা মামলা দায়ের সংক্রান্ত ঘটনা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি।
বরাবর
পুলিশ সুপার
নারায়ণগঞ্জ।
জনাব
বিনীত নিবেদন আমি নিম্ন স্মাক্ষরকারী এই মর্মে জানাচ্ছি যে, গত ১৮ এপ্রিল সোমবার রাতে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই উত্তম কুমার রায় গার্মেন্টস শ্রমিক আসলামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ খবর পেয়ে আসলামের স্ত্রী নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় গিয়ে এসআই উত্তম কুমার রায়ের সাথে দেখা করে এবং কেন তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানতে চান। এসময় এসআই উত্তম বলেন, তোর স্বামী ডাকাতি মামলার আসামী। একথা শুনে তার স্ত্রী প্রতিবাদ করেন এবং বলেন সে ও তার স্বামী আসলাম শহরের জিমখানা এলাকার রুহুল আমিনের মালিকাধীন শান্ত হোসিয়ারীতে কাজ করেন। এরপর এসআই উত্তম তাকে একটি মোবাইল নম্বর (০১৯১১-৩৩ দিয়ে বলেন, এটা আমার নম্বর দুই হাজার টাকা নিয়ে আয়। এই টাকা দিলে ৩৪ ধারায় চালান দিয়ে দেব। বিভিন্ন স্থানে ঘ্ড়ুাঘুড়ি করে ওই টাকা যোগাঢ় করতে না পেরে আসলামের স্ত্রী (প্লাবন রাজু, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক সকাল বার্তা) কাছে আসেন এবং ঘটনাটি জানান। এসআই উত্তম বাবু আমার পূর্বপরিচিত। সব শুনে আমি এসআই উত্তম বাবুকে ফোন করি। তিনি জানান, চাষাঢ়ায় এলাকাবাসী আসলামকে ধরে দিয়েছে। এখন বাসায় যাচ্ছি, সকালে এসে ছেড়ে দেব। এরপর আসলামকে থানা হাজত খানায় রেখে এসআই উত্তম বাসায় চলে যান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমি পুনরায় এসআই উত্তম কুমারকে ফোন করলে তিনি জানান, ভাই আমার কিছু করার নেই,চাষাঢ়া ফাঁড়ির পুলিশ ধরে আমাকে দিয়েছে। আমার কিছু করার নেই। আপনি ওসি সাহেবকে বলুন। এরপর আমি তাকে প্রশ্ন করি, গতকাল বললেন, চাষাঢ়া লোকজন ধরে দিয়েছে, আজ বলছেন, চাষাঢ়া ফাঁড়ির পুলিশ ধরেছে’ এত সবের কারন কি? আবার তার স্ত্রীর কাছে টাকা চাইছেন, টাকা দিলে ৩৪ ধারায় চালান করবেন বলছে। এসব কী? এরপর আমি নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি(তদন্ত) শাহ্ জালাল সাহেবকে ফোন করি এবং বিষয়টি তাকে জানাই। এরপর ওসি(তদন্ত) শাহ্ জালাল সাহেব এসআই উত্তমকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে গরীব-নিরীহ গার্মেন্টস কর্মী আসলামকে একটি মিথ্যা চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান করেন। এসআই উত্তমের এ ধরনের আচড়ন আমাকে মারাত্মক ব্যাধিত করেছে। আপনার মত একজন দক্ষ ও পেশাদার পুলিশ কর্মকর্তা জেলায় কর্মরত থাকাবস্থায় এসআই উত্তমের এ ধরনের কর্মকান্ড পুলিশ বাহিনীর কর্মকান্ডকে প্রশ্নে মুখে ফেলেছে।
কে এই উত্তম?
একজন পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে উত্তম এই জেলায় চাকরী শুরু করেন। এরপর এএসআই হিসেবে একই জেলায় দীর্ঘদিন কর্মরত থাকাবস্থায় তার নানা অপকর্ম নারায়ণগঞ্জবাসীর মুখে মুখে। এরপর উত্তম এসআই হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলায় বদলী হয়ে যান। পথঘাট চেনা সচতুর উত্তম আবারও ফিরে আসেন নারায়ণগঞ্জ জেলায়। পোস্টিং নেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়। চাঞ্চল্যকর সাত খুনের পর শিমরাইলে পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে শ্রমিক ও জনগণের রোষানলে পরে। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এরপর এসআই উত্তম বদলী হয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায়। আগে থেকে পথঘাট চেনা এসআই উত্তম শুরু করে নানা অপকর্ম।
শহরের নিতাইগঞ্জ এলাকায় এসআই উত্তম তার ভাইকে দিয়ে গড়ে তুলেছেন বিএল হার্ডওয়ার। সেই দোকান থেকে কিছু দিন আগে র্যাব-১১ ফেনসিডিল উদ্ধার করে ও তার ম্যানেজান বিমলকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ রয়েছে, এসআই উত্তম ফেনসিডিল উদ্ধার করে আর উদ্ধার করা ফেনসিডিল তার মালিকানাধীন দোকানে রেখে বিক্রি করান।
নিরীহ লোকজনের কাছে টাকা চেয়ে না পেলেই মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আদালতে চালান দেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে শহরবাসীর মুখে মুখে।
অতএব, বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।
প্লাবন রাজু
নারায়ণগঞ্জ