রাণীনগর,নওগাঁ,বিজয় বার্তা ২৪
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মওসুমে আগাম ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে বিস্তীরর্ণ মাঠ জুড়ে এখন ধানের শীষের সোনালী রংঙের বর্ণিল ছোঁটার সমোরহ। যতদুর চোখ যায় শুধু সোনালী রঙের চোখ ধাঁধাঁনো দৃশ্য। মাঠ জুড়ে সোনালী রং বলে দিচ্ছে গ্রাম বাংলার কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ইরি-বোরো ধান চাষের দৃশ্য। চলতি মওসুমে ইরি-বোরো ধানের ভাল ফলনের বুকভরা আশা করছে কুষকরা। গত বন্যায় ধকল কেটে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতিতে আগাম ধান চাষ করায় কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ এখন পর্যন্ত হানা না দেওয়ায় রাণীনগর উপজেলায় ইরি-বোরো ধানের ভাল ফলন হচ্ছে বলে রাণীনগর কৃষি বিভাগ জানান। কিন্তু কৃষকরা বলছেন, শ্রমিক সংকট প্রকট হওয়ায় মাঠে মাঠে সোনালী রঙের পাকা ধান পুরোদমে কাটা-মাড়াই শুরু করা যাচ্ছে না।বাজারে নতুন ধানের আমদানি হওয়ায় টুকটাক কেনাবেচা শুরু হলেও দর নিয়ে শঙ্কায় আছে মাঠ পর্যায়ের চাষিরা। রাণীনগর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চণতি বছরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৪শ’ ১০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১৯ হাজার ১শ’ ১০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে চাষ কম হয়েছে। চলতি মওসুমে রাণীনগর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গভীর নলকূপ ২শ’৬২ টি, বিদ্যুৎ চালিত ব্যক্তিগত ১শ’ ১৫টি,ডিজেল ৯৮টি,অগভীর বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত ৩ হাজার ৩শ’ ৪৬টি, নদী থেকে এলএলপি বিদ্যুৎ চালিত পাম্প ২১টি’র মাধ্যমে আবাদি ইরি-বোরো ধান ক্ষেতে সেচ প্রদান করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক সময়ে চারা লাগানো , নিবিড় পরিচর্যা , নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ , যথা সময়ে সেচ দেওয়া , সার সংকট না থাকায় উপজেলার কৃষকরা জিরাশাইল, খাটো-১০, স্বর্ণা-৫ জাতের ধান চাষ করেছে। নতুন ধান কাটার শুরুতেই বিঘা প্রতি ২০/২২ মণ হারে ধান উৎপাদন হচ্ছে। নওগাঁর ছোট যমুনা নদী বেষ্টিত নিমাঞ্চল হওয়ায় উর্বরা পলি মাটির জমিতে ইরি-বোরো ধান ব্যাপক আকারে চাষ হয়েছে। এছাড়াও বিল মুনসুর , বিল চৌরা, রক্তদহ বিল, সিম্বা, খাগড়া, বেলঘড়িয়া, করজগ্রাম আতাইকুলা, গোনা, একডালা, কালীগ্রাম,রাতোয়াল, ভাটকৈ, গুয়াতা মাঠে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পাকা ধানের সোনালী রং। ধান কাটার শ্রমিক সংকট প্রকট হওয়ায় স্থানীয় চাষিরা পাকা ধান ঘরে তোলার লক্ষ্যে শ্রমিকদের চড়া মজুরী দিয়ে ধান কাটা চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার ঝিনা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম লাল জানান আমি এ বছর ১৯ বিঘা জমিতে জিরা জাতের ধান লাগিয়েছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শ যথা সময়ে ভাল পরিচর্যা করায় আমার জমিতে ধান ভালো হয়েছে। গত শক্রবার দেড় বিঘা জমির ধান কেটে ৩৭ মন ধান পেয়েছি। তবে বাজার দর ভাল থাকলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে কিছুটা লাভ হবে। উপজেলা সবচেয়ে ধানের মোকাম আবাদপুকুর হাটের ধার ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন জানান, হাটে তেমন ধান আমদানি শুরু হয়নি। তবে টুকটাক কেনাবেচা হচ্ছে। জিরা জাতের ধান প্রতিমণ মান ভেদে ৬শ’৭০ থেকে ৬শ’৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম গোলাম সারোয়ার জানান, চলতি মওসুমে ইরি-বোরো ধান ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যে ধান পেঁকে যাওয়ায় চাষিরা আগাম কাটা-মাড়াই শুরু করেছে। প্রতি বিঘায় ২২/২৩ মন হারে ধান হচ্ছে। বাজার মূল্য ভালো না থাকায় কৃষকরা শঙ্কায় রয়েছে।