বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মঙ্গনুল হক (পিপিএম) বলেন, মধ্যবয়সী যুবকেরা বাসা ভাড়া নিয়ে দেশে জঙ্গী তৎপরতা চালাচ্ছে। অনেকটা কৌশলী এ যুবকরা ভাড়াটিয়া হিসেবে প্রবেশ করে তাদের কর্মী সংগ্রহের মাধ্যমে এলাকায় নাশকতার ছক আঁেক। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে জঙ্গীরা তাদের কার্য্যক্রম পরিচালনা করে। জঙ্গী তৎপরতার সাথে যারাই জড়িত সেই মধ্য বয়সী যুবকদের চলাফেরার গতিবিধি সাধারন মানুষ থেকে ভিন্ন। এমনকি ঐ যুবকেরা স্থাণীয় মসজিদে নামায আদায় করে না, স্থাণীয় লোকজনদের সাথে চলফেরা করার ক্ষেত্রে দূরত্ব বজায় রাখে। এ ধরনের রহস্যজনক যুবকদের সন্দেহ হওয়ার সাথে সাথেই আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সংবাদ দেওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ করেন। গতকাল রোববার সকালে ফতুল্লা মডেল থানা অডিটোরিয়ামে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরফুদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এবং ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিনের সার্বিক পরিচালনায় এলাকার ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক উক্ত বক্তব্য প্রদান করেন।
এসপি মঙ্গনুল হক আরো বলেন, যে সকল মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে সমাজের মানুষের সাথে বসবাস করে আসছে তাদের সম্পর্কে তথ্য নেয়ার প্রয়োজন নেই। ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র সহ পূনাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত চাওয়ার পরেও অপরাগতা প্রকাশের সাথে সাথেই বিষয়টি আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অবগত করার জন্য ফতুল্লাবাসীকে অনুরোধ করেন। কেননা স্থাণীয় মানুষের সহযোগিতা ছাড়া দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করা সম্ভব হবে না। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে দেশ বহুদূর এগিয়ে গেছে। বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধা সৃষ্টি করার জন্য একটি মহল দেশে জঙ্গীবাদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের মাটিতে জঙ্গীদের মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া যাবে না। তিনি জঙ্গীদের বিষয়ে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ তথা দেশের কোথাও জঙ্গী তৎপরতার চেষ্টা করা হলে ফলাফল ভয়াবহ হবে। কেননা, মানুষ মারার মধ্য দিয়ে কোন বীরত্ব নেই। মানুষ ভালবাসার মধ্য দিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া যায়। বর্তমানে দেশের মানুষ অনেকটাই সচেতন। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে মানুষ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। আর পুলিশ প্রশাসন জনগনের ঐক্যের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে জঙ্গীবাদ রোধ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রধান মন্ত্রী মহোদয় অনেক রাষ্ট্র প্রধানের সাথে জঙ্গি সন্ত্রাসের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বিশ্বের রাষ্ট প্রধানরা কেউই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ পছন্দ করেন না। জঙ্গীবাদ দমনের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্র প্রদানরা বাংলাদেশ সরকারের সাথে থাকার ঘোষনা দিয়েছেন বলেও তিনি তার বক্তব্যে বলেন। সে সাথে প্রতিটি মহল্লা বাসীর সামাণ্য সচেতনতাই দেশ থেকে মাদক ও জঙ্গীবাদ দূর করা সম্ভভ হবে বলেও তিনি জানান।
ফতুল্লা মডেল থানার সুযোগ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রত্যেকের একটি সামাজিক দাযিত্ব আছে। আমাদের সমাজে যারা মাদক ও জঙ্গীবাদের সাথে জড়িত তাদের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করতে হবে। আর মাদক ও জঙ্গীবাদ বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেয়া ঈমানী দায়িত্ব। তিনি তার বক্তব্যে মাদক ও জঙ্গীবাদ নিমূল্যে জেহাদের ঘোষনা প্রদানের মাধ্যমে বলেন, মাদক ও জঙ্গী আজরাইলের চেয়েও ভয়ংকর। একটি পরিবার ধ্বংসের জন্য জঙ্গী ও মাদক যথেষ্ট। তাই প্রতিটি পরিবারকে সচেতন হতে হবে, তার ছেলে কখন কার সাথে চলাফেরা করে, রাথে কখন বাড়ী ফিরে, পরিবারের সদস্যদের সাথে রহস্যজনক আচরন করে কিনা? এমন বিষয়টি সচেতনতার সাথে লক্ষ্য করলেই বুঝা যাবে যুবকটি বিপদগামী হয়ে পড়েছে। পরিবারের সচেতনতার অভাব দেখা দিলেই প্রতিটি পরিবারের আগামি দিনের ভবিষৎ অন্ধকারের পথে নিমজ্জিত হচ্ছে বলেও তিনি তার বক্তব্যে বলেন।
ওসি কামাল উদ্দিন আরো বলেন, জেলার অন্যান্য থানার চেয়ে ফতুল্লার জনগন মানুষ অনেকটা সচেতন। সে সাথে ফতুল্লাবাসী যে কোন বিষয়ে স্থাণীয় পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে প্রশংসার ভাগীদার হয়েছেন আমাদের এসপি মহোদয়ের কাছ থেকে। পুলিশ লাইন অনুষ্ঠিত কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির জনসভায় সবচেয়ে ফতুল্লার মানুষ বেশি যোগদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সাফল্য মন্ডিত করায় ফতুল্লাবাসীকে তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ওসি কামাল উদ্দিন আরো বলেন , আমি বিশ্বাস করি আমার থানাধীন এলাকায় যারা বসবাস করছেন সবাই মাদক সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দূর করতে পুলিশকে তথ্যদিয়ে সহযোগিতা করবে ইনশাল্লাহ। আমরা আমাদের সমাজকে আরো সুন্দর রাখতে পারবো স্থাণীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতার মাধ্যমে। সমাজে অপরাধীদের সংখ্যা খুবই কম কিন্তু ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তারপরও আমরা প্রকৃতভাবে অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে পারছিনা। আর অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সমাজের সকল স্তরের মানুষদের ঐক্য হতে হবে। তিনি আরো বলেন, সোমবার ফতুল্লায় প্রতিটি বাড়ীতে বাড়ীতে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। আর সুষ্টুভাবে তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এ অনুষ্ঠানে বিশেষে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক)মো. মতিয়ার রহমান, এ এস পি মাসুদ । আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা রির্পোটার্স ক্লাবের সভাপতি রনজিৎ মোদক. ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালী মাহমুদ খান, থানা কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি আলহাজ্ব মীর মোজাম্মেল আলী, সেক্রেটারী গোলাম মোস্তফা, আইয়ুব আলী মেম্বার, ফতুল্লা রির্পোটার্স ক্লাবের সাধারন সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক এ আর কুতুবে আলম, ফতুল্লা প্রেস কøাবের সাধারন সম্পাদক আনিসুজ্জামান অনু, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব নফজলুল হক পলাশ, কাজী মোশাররফ হোসেন, প্রবীন শিক্ষক আবুল হাশেম, ফেরদৌস খান। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের আপ্যায়নে ছিলেন ওসি (তদন্ত)শাহজালাল, ওসি মজিবুর রহমান (প্রশাসন)সেকেন্ড অফিসার এস আই ফয়েজুর রহমান, এস আই মিজানুর রহমান-২, এস আই কাজী এনামুল হক , এ এস আই কামরুল হাসান, এ এস আই তাজুল ইসলাম।