নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি নাসিম ওসমানের মৃত্যুতে উনার শূন্য আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে নির্বাচন করেছি। জনগনের ভোটে আমি নির্বাচিত হয়েছি। শূন্য স্থান পূরণ করেছি। আমি জাতীয় পার্টির একজন সাধারণ সদস্য মাত্র। আমি দলের সভাপতি না বা নাসিম ওসামনের মত সভাপতি ম-লীর সদস্যরা। নারায়ণগঞ্জে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করবে দলের দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। তাতে আমার কোন বাধা নাই। কার্যালয় না থাকায় আমার দায়-দায়িত্ব না। তবে দলীয় কর্মকান্ডের ব্যাপারে নেতাকর্মীরা যদি আমার কাছে সহযোগীতা চায় তাহলে আমি সকল ধরনের সহযোগীতা আমি করবো। যতক্ষন পর্যন্ত আমার জীবন চলবে ততক্ষন পর্যন্ত আমি ভবিষ্যত প্রজন্ম জন্য কাজ করে যাবো।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় শহরের পৌর ওসমানী স্টেডিয়াম সংলগ্ন একে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু পদক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় একটি পত্রিকায় নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টি সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ করায় ওই পত্রিকাটির উদ্বৃত্তি দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধান অতিথির মঞ্চের সামনেই বসা ছিলেন ওই পত্রিকাটির সম্পাদক।
জাতীয় পার্টি সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে আমি নারায়ণগঞ্জের মানুষের চাহিদা এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করছি। আমি শিক্ষা স্বাস্থ্য ও শিল্পায়নের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আর এ উন্নয়ন মূলক কাজে আমাকে জাতীয় পার্টির উর্ধতন নেতা থেকে শুরু করে তৃনমূল কর্মী পর্যন্ত সবাই সার্বিকভাবে সহযোগীতা করছেন এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বর্তমান দলীয় রাজনীতির থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য উন্নয়ন কাজ করাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই দলের সকল নেতাকর্মীরা আমাকে স্কুল, রাস্তাঘাট উন্নয়ন সহ সকল ধরনের উন্নয়ন কাজে সহযোগীতা করছেন। শুধু জাতীয় পার্টি না আমাকে আওয়ামীলীগ, বিএনপি সহ প্রত্যেকটি দলের নেতাকর্মীরা সহযোগীতা করছেন। নারায়ণগঞ্জের সকল দলের নেতাকর্মীরা রাজনীতির থেকে উন্নয়নটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মঞ্চে উপস্থিত মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আনোয়ার ভাই আমার রাজনৈতিক গুরু। উনি আওয়ামীলীগের মহানগরের সভাপতি। আমরা বন্দরে জাতীয় পার্টি থেকে ৩০০ পাউন্ডের বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন করেছি। আমি এর আগে বন্দরে এতোবড় উৎসব দেখিনি। স্কুল কলেজের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী ওই জন্মদিন উৎসবে অংশ নিয়েছে। বন্দরে জাতীয় পার্টি যেভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন করেছে সেভাবে নারায়ণগঞ্জ শহরে কেন সারাবাংলাদেশে কোথাও এমন জন্মদিন পালন করা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আর্দশে আগেও বিশ্বাস রেখেছি বিশ্বাস রয়েছে এবং বিশ্বাস থাকবে। আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে চাই। যাতে করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম রাজাকারদের গলাটিপে ধরতে পারে। আর কোন মুক্তিযোদ্ধা যেন জয়বাংলা স্লোগান দিতে ভীত না হয় আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বক্তৃতার আয়োজন করেছি। ২১ ফেব্রুয়ারী উপলক্ষ্যে রচনা প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছি। এসব কিছুর মধ্য দিয়ে আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মকে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস জানাতে পারি। যাতে করে তারা বুক ফুলিয়ে রাজাকারদের টুটি চেপে বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, ফ্রিডেল ক্যাস্টর দেশে গিয়ে তার সমালোচনা করে ওই দেশ থেকে আর ফিরে আসা যাবে না। ওই দেশের মানুষেরা সৃষ্টিকর্তার পরের আসনেই তাকে রেখেছেন। কিন্তু আমাদের দেশে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু মানুষের দ্বিমত পোষন করেন। যারা বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু না বলে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান বলেন তারা যদি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তাদেরকে বঙ্গবন্ধু বলে সম্বোধন করতে হবে।
জেলা প্রশাসক ও নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সভাপতি আনিসুর রহমান মিঞার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানের আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ কুতুব উদ্দিন আকসির, নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খালেদ হায়দার খান কাজল, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা ইয়াসমিন, ঘাতক দালাল নিমূল কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি চন্দন শীল, প্রফেসর শিরীন বেগম।
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের আয়োজনে সঙ্গীত, চিত্রাঙ্গন ও আবৃত্তি প্রতিযোগীতার বিজয়ীদের ৩টি ইভেন্টে ৪ গ্রুপের মোট ১২জনকে স্বর্ন পদক, ১২জনকে রোপ্য পদক, ও ১২ জনকে ব্রোঞ্জ পদক সহ ১২০ জনকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া রাইফেল ক্লাবের পক্ষ থেকে শিশু কল্যান তহবিল গঠনের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগীতায় যারা অংশ গ্রহন করেছেন তাদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত কিছু ছবি বিক্রি করা হয়েছিল। সেই সকল বিক্রিত ছবি থেকে ছবির চিত্রশিল্পীদের মধ্য থেকে ৩০ জনকে ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বিকেএমইএ এর সহ সভাপতি(অর্থ) জিএম ফারুক।