বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আর মাত্র ২০ দিন বাকী। এর মধ্যেই ধীরে ধীরে জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের অর্ন্তদ্বন্দে বেড়িয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।
বিগত দিন বিএনপি সরকারের আমলে কোটি কোটি টাকা অবৈধ পথে উপার্জন করার ক্যারিশমেটিক তিন পুরুষ “তৈকাগি” (তৈমুর, কালাম, গিয়াস) দের কুকীর্তি প্রকাশ করে দিয়ে আলোচনার লাইম লাইটে চলে আসেন বিএনপির আরেক ক্ষমতাধর প্রভাবশালী নেতা শহর বিএনপির উপদেষ্টা এম.এ মজিদ। যে কারণে নাসিক নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী এড. শাখাওয়াত হোসেন ভোটারদের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছেননা মর্মেও মন্তব্য করেন।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনীত প্রার্থীর অবস্থান, জনমতের গতিবিধি সহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়ার জন্য বিএনপি-র গুলশান কার্য্যালয়ে আয়োজিত সভায় কোটি কোটি টাকার গোমর ফাঁস করেন প্রভাবশালী এই নেতা। সভাটি বিএনপির নীতি নির্ধারনী সভা ছিল বিধায় শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তবে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার, এড্ আবুল কালাম, মোঃ গিয়াস উদ্দিন, এবং শহর বিএনপির উপদেষ্টা এম.এ মজিদ সহ আরো স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা চলাকালে বিএনপি নেত্রী একে একে সকল নেতৃবৃন্দের আলোচনা শুনছিলেন। কিন্তু হঠাৎ যেন “বিনা মেঘে বজ্রপাত”। আলোচনার মাঝপথে হাটে হাড়ি ভাংলো নারায়ণগঞ্জ শহর বিএনপির প্রভাবশালী নেতা উপদেষ্টা এম.এ মজিদ। তিনি বলেন, মেডাম, তৈকাগিরা (তৈমুর-কালাম-গিয়াস উদ্দিন) বিআরটিসি, চেয়ারম্যান পদে এবং এমপি পদে আসিন হয়েই কোটি কোটি টাকা অবৈধ ভাবে উপার্জন করেছেন, ক্ষমতার হালুয়া-রুটি ভাগ বাটোয়ারা করেছেন। আজকে তারা নির্বাচনের মাঠে নাই। নেত্রী মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে না। তারা এতই অর্থলোভী যে, নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারো অর্থ উপার্জনের ফন্দি ফিকির করছেন। “তৈকাগিরা” চায় নির্বাচনের খরচের জন্য মোটা অংকের টাকা তাদের হাতে তুলে দেন, তারা ভাগ বাটোয়ারা করে ফেলুক। তৈকাগি’রা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের নিজ নিজ নামে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত করে ফেলেছেন।
এক পর্যায়ে বিএনপি নেত্রী চরমভাবে উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং কঠোর মনোভাব ব্যাক্ত করে বিএনপির এই তিন নেতাকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে কর্মক্ষেত্র নির্ধারণ করে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জোর তাগিদ দেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম এর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন সভায় উপস্থিত থাকা জনৈক বিএনপি নেতা।
এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এড্ শাখাওয়াত হোসেন নগরের যে সব এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন সে সব এলাকার বাসিন্দাদের সাথে আলাপ কালে তারা বলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন সাবেক মেয়র ডাঃ আইভী। সে তুলনায় এড্ শাখাওয়াত এর জনপ্রিয়তা এখনও তলানীতে। কারণ হিসেবে তারা বলেন আইভী দীর্ঘদিনের নীতি নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার মাপ কাঠিতে অনেক বিশ্বাসী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর। তার অতীত পরিচয় তিনি আদর্শবাদী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য, সে কারণে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অপর দিকে এড্ শাখাওয়াত হোসেন পেশাজীবি হিসেবে নিজ ক্ষেত্রে সফল। হঠাৎ একটি হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হিসেবে পরিচিতি লাভ করা ব্যক্তিত্ব। হতে পারে তিনি আইনজিবী হিসেবে জনপ্রিয়। নাসিক নির্বাচনে বিএনপি আইভীকে মোকাবেলা করার মতো কোন যোগ্য প্রার্থী না পাওয়াতে অবশেষে এড শাখাওয়াত হোসেনকে বেছে নেওয়ার কারনেই তার কিছুটা পরিচিতি নগরবাসী জানে। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও স্বচ্ছতার নিরিখে আইভীর উচ্চতা স্পর্শ করতে এড্ শাখাওয়াত হোসেনকে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।