নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় নারাণণগঞ্জ চাষাঢ়া শহীদ মিনারে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে ভাষাসৈনিক নাগিনা জোহা’র স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সানি’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন।
সাইফুর রহমান সোহাগ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ছাত্রলীগ করতে হলে ভাল কর্মীর পাশাপাশি ভাল ছাত্রও হতে হবে। যাদের আন্দোলনের কারনে আমরা মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি, তাদের মধ্যে অন্যতম ভাষা সৈনিক রত্মগর্ভা মা নাগিনা জোহা আজ নেই। তার স্মরণে শুধু শোকসভা করে দায়িত্ব শেষ মনে করলে চলবে না। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। তবেই তার আত্মা শান্তি পাবে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে একেএম শামীম ওসমানের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।তারা জন্য তার কাজে আমাদের সহযোগীতা করত হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে সবার আগে নিজেদেরকে সোনার মানুষ হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, সোনার বাংলা গড়ার কারিগর এই নারায়ণগঞ্জেই রয়েছে।
এসময় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সহ সভাপতি কমান্ডর গোপী নাথ দাস, সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, এড মাহমুদা মালা, শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, শহর সেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হোসেন, মহিলা নেত্রী অধ্যক্ষ শিরীন বেগম প্রমূখ।
এসএম জাকির হোসেন বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয়েছে সাত মাস হলো। এই সাত মাসে সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ আমরা নারায়ণগঞ্জে দুইবার এসেছি। এ থেকেই বুঝা যায় নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগকে আমরা কতটুকু প্রধান্য দিয়ে থাকি এবং নারায়ণগঞ্জের নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রত্যাশাও বেশী করি। তাই নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের বাণী জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় পৌছে দিতে হবে। আপনাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় নারায়ণগঞ্জ ইউনিটকে একটি মডেল ইউনিট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে-এই প্রত্যাশা করি।
এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন’র সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান সজীব, মশিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক তানজীল ভূঁইয়া তানভীর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. ইমরান খান,নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আলী আকবর, মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান নান্নু, প্রচার বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান সজীব, সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মনির হোসেন, আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহীম, মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান রিয়াদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হাসনাত বিন্দু নারায়ণগঞ্জ আইন কলেজের ছাত্র নেতা এম এম হাসান, আমজাদ হোসেন, বদিউজ্জামান সহ আরো অনেকে।
সাফায়াত আলম সানি বলেন, ৭৫’এর ১৫ আগষ্ট জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যার পর খুনি মোশতাক হীরা মহলে ফোন করেছিলো। সেই ফোন রিসিভ করেছিলেন রত্মগর্ভা মা নাগিনা জোহা। মোশতাক তাকে বলেছিলো, তোমার স্বামীকে আমার মন্ত্রীসভায় যোগ দিতে বলো। মা নাগিনা জোহা তখন খুনি মোশতাককে বলেছিলেন, বিষ খাইয়ে প্রথমে আমি আমার স্বামীকে মারবো, এরপর আমার সন্তানদের মারবো এবং সবশেষে নিজে বিষপান করে আত্মহত্যা করবো তবুও আমার স্বামীকে তোমার মন্ত্রীসভায় যোগ দিতে বলবো না। কতটুকু দেশপ্রেম থাকলে একজন নারী এ কথা বলতে পারেন, সেটাই সবাই ভেবে দেখবেন। সকল সুখ স্বাচ্ছন্দকে পায়ে ঠেলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারন করে তিনি এ কথা বলেছিলেন। আমরা আজকের এই শোক সভা থেকে এই মহীয়ষী নারীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।তিনি যেন জান্নাতবাসী হন মহান আল্লাহপাকের কাছে সেই দোয়া করছি। তিন তিনটি রত্ন নারায়ণগঞ্জবাসীকে উপহার দিয়েছেন তিনি। যারা নারায়ণগঞ্জকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এই পরিবারের নেতৃত্বে রাজনীতি করতে পেরে আমরা গর্বিত। এই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মও তৈরী হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির হাল ধরতে। এই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের কান্ডারী অয়ন ওসমানের নেতৃত্বে আমরা নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগ ভবিষ্যত নারায়ণগঞ্জ নির্মানে কাজ করার অঙ্গিকার করছি।
বক্তব্য শেষে ভাষাসৈনিক রত্নগর্ভা মাতা নাগিনা জোহার’র আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া প্রার্থনা করা হয়।