নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামী ২৮ মার্চ নির্ধারন করেছে।
সোমবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ৭ খুন মামলায় কয়েকজন আসামী ও সাক্ষীর স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী রেকর্ডকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিনসহ ৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহন এবং জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলার আসামী প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত প্রথমে ৭ খুন মামলার ১৩ জন আসামী ও সাক্ষীর স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী রেকর্ডকারী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিন সাক্ষী প্রদান করে। সাক্ষ্য শেষে উপস্থিত ২৩ জন ও পলাতক ১২ জন আসামীর মধ্যে ৩৩ জনের আইনজীবী জেরা করেন। পরে মৃতদেহ সুরতহালকারী তৎকালীন বন্দর থানার সাব ইন্সপেক্টর বেলায়েত হোসেন, সাব ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমান, ময়না তদন্তের জন্য লাশ বহনকারী পুলিশ কনষ্টেবল রমজান মৃর্ধা, অপহরণের পূর্বে আদালতে কথা বলে বিদায় নেয়া নিহত নজরুল ইসলামের সহযোগী আবুল কালাম আজাদ, জাহাঙ্গীর আলম, ফখরুল ইসলাম সাক্ষ্য প্রদান করেন এবং ৩৩ জন আসামীর পক্ষে আইনজীবী জেরা করেন।
৭ খুনের পৃথক দুটি মামলার মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জন হত্যা মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির দায়ের করা মামলার দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করার দিন ধার্য থাকলেও নুর হোসেনের আইনজীবী সময়ের আবেদন করায় আদালত পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামী ২৮ মার্চ নির্ধারন করেছে।
এদিকে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ করেন, আদালতে আসামী নূর হোসেন সাক্ষীদের চোঁখ রাঙিয়ে ভয় দেখালেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি পিপির বিরুদ্ধে আসামীদের পক্ষে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করে পিপিকে পরিবর্তনের দাবি জানান।
আসামী র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা মেজর আরিফ হোসেনের পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুর রশিদ ভূঁইয়া জানান, আদালতে ১০ সাক্ষীদের জেরা করা হয়েছে। আমরা অন্ধকারে আছি, আলোর পথ খুঁজতেছি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারী আলোচিত ৭ খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামী করে অভিযোগ গঠন করে আদালত। আদালত ২৯ ফেব্রুয়ারী ৭ হত্যার বিষয়ে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদি সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকাররের মেয়ের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহন করেন । পরে ৭মার্চ বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহন শেষ হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম সহ ৭ জনকে অপহরণের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়। খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার ৪ সহযোগী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একটি মোট ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ এক বছর তদন্তের পর তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।