নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুইটি মামলার মধ্যে একটি মামলার সুরত হাল রিপোর্টে থাকা দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ গ্রহন ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। অপর মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটিকে পঞ্চম দিনের মতো জেরা করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামীর উপস্থিতিতে সোমবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে এ শুনানী করা হয়। আদালত মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারন করেছে ২১ মার্চ। মামলার বিচার কার্য বিলম্বিত করার জন্যই একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে সময় প্রার্থনাসহ নানা অজুহাত সৃষ্টির চেষ্টার করছে বলে বাদী পক্ষের অভিযোগ।
সোমবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে প্রধান আসামী নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামীকে হাজির করা। আদালত ৭ খুনের ঘটনায় দায়ের করা দুইটি মামলার মধ্যে আইনজীবি চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার সুরত হাল রিপোর্টে থাকা সাক্ষী ইউসুফ ও মোহাম্মদ হোসেনের সাক্ষ গ্রহন করা হয়। সাক্ষ গ্রহন শেষে উপস্থিত ও পলাতক ৩৫ আসামীর মধ্যে ৩৩ জন আসামীর আইনজীবী ওই দুই সাক্ষীকে জেরা করেন। নুর হোসেন ও তারেক সঈদের পক্ষে জেরা না করে তার আইনজীবী আদালতকে জানান তারা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন। আদালত শুনানী শেষে ২১ মার্চ পরবর্তী স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার দিন ধার্য করেছে।
পরে আদালত সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জন হত্যা মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটির পঞ্চম দিনের মতো জেরা শুরু করেন। একই ভাবে নুর হোসেন ও তারেক সঈদের পক্ষে বাদীকে জেরা না করে আইনজীবী আদালতে সময় প্রর্থনা করলে আদালত ২১ মার্চ স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার দিন ধার্য করে।
মামলার বিচার কার্য বিলম্বিত করার জন্যই একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে সময় প্রার্থনাসহ নানা অজুহাত সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ করে বাদী পক্ষের আইনজীবী বলেন, মামলার ন্যায় বিচারের সার্থে দ্রুত সাক্ষ গ্রহন ও জেরা সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারী আলোচিত ৭ খুনের দুটি মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামী করে অভিযোগ গঠন করে আদালত। আদালত ২৯ ফেব্রুয়ারী ৭ হত্যার বিষয়ে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলার মধ্যে একটি মামলার বাদি সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকাররের মেয়ের জামাতা ডা. বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহন করেন । পরে ৭মার্চ বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্য গ্রহন শেষ হয়।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম সহ ৭ জনকে অপহরণের তিন দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়। খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার ৪ সহযোগী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একটি মোট ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ এক বছর তদন্তের পর তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।