নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একে এম শামীম ওসমান বলেছেন, মুখোশধারী সুযোগ সন্ধানী মোস্তাক মার্কা নেতৃত্ব সারাদেশে ঘুরে ফিরে আওয়ামীলীগকে আঘাত করে। তেমনি মোস্তাক মার্কা নারায়ণগঞ্জেও রয়েছে। যারা কখনও নৌকা ফুটো করতে চায়, যারা কখনও নৌকার বৈঠা ফেলে দিতে চায়, যারা কখনও নৌকায় ওঠতে চায় তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে। যুগে যুগে যেমন সিরাজদৌল্লা ছিল মীর জাফরও ছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ছিলেন তেমনি খন্দকার মোস্তাক ছিল। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতেও মোস্তাকদের আনাগোনা বেড়ে গেছে।
শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ২নং রেলগেটে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ভাষা সৈনিক মরহুম মফিজুল ইসলাম স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ৭৫ এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যখন আমার বাবাকে জেলে বন্দী করা হলো, তখন তার সামনে থেকেই জাতীর চার নেতাকে জেলের ভেতর নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এর পূর্বে তাদেরকে মোস্তাকের সরকারে যোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা বলেছিলেন, প্রয়োজনে জীবন দেব, তবুও বেঈমানের দলে যোগ দিব না। এই অপরাধে তাদের হত্যা করা হয়েছিল। এরপর যখন আমার বাবা ছাড়া পায়, তাকেও মোস্তাকের দলে যোগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আমার বাবা ঘৃণার সাথে তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়ায় তারা আমাদের দেউলিয়া করে দিতে চেয়েছিল। মাত্র ৪০ হাজার টাকার জন্য তারা আমাদের বাড়ি ঘর বন্ধক নিয়ে আমাদের গৃহহীন করতে চেয়েছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের মেহনতি জনগণ আমাদের পরিবারকে ভালোবেসে সেদিন চাঁদা উঠিয়ে আমাদের বাড়িটি রক্ষা করেছিল।
মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সদস্য নাজমুল আলম সজল, এ্যাড. মাহমুদা মালা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমীর হোসেন, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহিলালীগ নেত্রী কাউন্সিলর ইসরাত জাহান খাঁন স্মৃতি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, কাশিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোমেন সিকদার, আলিরটেক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি প্রমুখ।
তিনি আরো বলেন, এরপর যখন বিএনপি সরকারের আমলে দেশে বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে নেয়া বারণ করা হলো, ঠিক তখনই বীরের মত মফিজ চাচা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে একত্রিত করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। মফিজ চাচা ওসমান পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। আমার বাবা বলতেন মফিজুল ইসলাম একজন নি:স্বার্থ রাজনীতীবিদ ছিলেন। আমার বাবা বলতেন মফিজ চাচার মত ত্যাগী ও নি:স্বার্থ নেতা দেখেননি। আমরা তার নামে শুধু রাস্তা নয় অনেক কিছুই করব। তার আগে আমাদের প্রাণ খুলে তার জন্য দোয়া করবো।
তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা আপনি এগিয়ে যান। যেখানে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল সেই নারায়ণগঞ্জের মানুষ আপনার সাথে আছে।’ তার মত ত্যাগী নেতা খুব কমই দেখেছি। আজ তিনি আমাদের মাঝে বেঁচে নেই। কিন্তু তিনি যে কৃতিত্ব দেখিয়ে গেছেন, তা নারায়ণগঞ্জের মানুষ কখনোই ভুলবে না।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন বলেন, আগামী সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আপনাদের মধ্যে থেকেই নির্বাচিত করা হবে। আপনাদের মতামত ও রায়েই প্রার্থী নির্বাচিত করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মনোনয়ন চাওয়া হবে। আপনারা এমন প্রার্থী দিবেন যিনি নারায়ণগঞ্জের ব্যাপক উন্নয়ন করতে পারবেন।