স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের দুটি পত্রিকা গত বিশ বছর ধরে আওয়ামী লীগ এবং আমার নামে কুৎসা রটনা করেছে। তাদের মুখোশ আজ উন্মোচিত। তাদেরও বিচার হবে।
সোমবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের নামোল্লেখ করলেও অন্য দৈনিকটির নাম নেননি প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে দৃশ্যত প্রধানমন্ত্রী প্রথম আলোর কথা বলেছেন।
২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকারকে সমর্থনের জন্য এ দুটো পত্রিকার সমালোচনা করে থাকেন অনেকে। সমপ্রতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম সে সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই’র দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার কথা স্বীকার করার পর আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী দলের নেতারা মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে ৭০টির বেশি মামলা করেছেন।
অনুষ্ঠানে সম্পাদক মাহফুজ আনামকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিএফআই এর সঙ্গে উনার কী সখ্যতা ছিল? উনাকে যা ধরিয়ে দিতেন তাই হুবহু ছাপিয়ে দিতেন। যুদ্ধাপরাধীদের যেমন বিচার হচ্ছে, ঠিক সেভাবে একদিন তাদেরও বিচার হবে।
তিনি বলেন, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম আমাকে দুর্নীতিবাজ বানানোর জন্য বহু চেষ্টা করেছিলেন। তিনি স্বীকারও করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দুটি পত্রিকা ডিজিএফআইয়ের লিখে দেওয়া মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে সে সময় রাজনীতি থেকে আমাকে এবং খালেদাকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়েছে।
‘সত্য কখনো চাপা থাকে না। মাহফুজ আনামকে একটা কথাই বলব- অনেক চেষ্টা করেছেন। আপনার পিতৃতুল্য ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও দুর্নীতিবাজ বানাতে পারেনি। আর আপনি।’
২০০৭ সালে এক-এগারোর প্রেক্ষাপট তৈরিতে ষড়যন্ত্রে জড়িতদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই দেশ চালাবে না, দেশ চালাবে সরকার প্রধান।’
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই সে সময় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির খবর’ সরবরাহ করেছিল জানিয়ে গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক টেলিভিশন আলোচনায় ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, যাচাই না করে তা প্রকাশ করা ছিল ‘বিরাট ভুল’।
তার ওই স্বীকারোক্তির পর আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি নেতারাও ডেইলি স্টার ও পত্রিকাটির সম্পাদকের ওই ভূমিকার সমালোচনায় মুখর হন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেও গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফেইসবুকে এক পোস্টে মাহফুজ আনামের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।