স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপ এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বার বার নাকচ করা হলেও এসব ইস্যুতে এখন আলোচনা জোরদার হচ্ছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দীর্ঘ দিন ধরেই চলমান সংকট নিরসনে আলোচনার মাধ্যমে সবদলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে এসব দাবি বার বার নাকচ করে দেওয়া হচ্ছে।
দেশের চলমান সংকট নিরসন এবং সন্ত্রাস মোকাবেলায় সংলাপই যে একমাত্র শক্তিশালী মাধ্যম আন্তর্জাতিক মহলও বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, গণতান্ত্রিক ইতিহাস, সহিষ্ণুতা, উদারতা এবং শান্তিপূর্ণ ধর্ম পালনের ঐতিহ্যই বাংলাদেশে সন্ত্রাস প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা। একই সঙ্গে তিনি গঠনমূলক রাজনৈতিক সংলাপ, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং গতিশীল নাগরিক সমাজের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেছেন। একটি ভারসাম্যপূর্ণ গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক বিতর্কেরও তাগিদ দিয়েছেন।
অপরদিকে, দেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার দেখতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)- এর প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর আগে অবশ্যই দেশে একটি জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এসময় দেশের গণতান্ত্রিক এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল। কোনো অগণতান্ত্রিক সরকারকে পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রগুলোকে নিজেদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়।
তাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে এমন একটি সরকার ও সংসদ দেখতে চায় যেখানে সংসদ সদস্যরা হবেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং নির্বাচনটা হবে সবদলের অংশগ্রহণে।
শুক্রবার বিকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ঢাকা সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল তাদের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে এ তাগিদ দেন।
শুক্রবার বিকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে তাদের সমাপনী সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের প্রধান জ্যা ল্যামবার্ট স্পষ্ট করেই বলেছেন, বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন যাতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এমন একটি পন্থা খুঁজে বের করতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে সর্বাধিক রাজনৈতিক দল যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করতেও সরকারকে তাগিদ দিয়েছেন তারা।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, বর্তমান সংসদের এমপিরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের প্রতি তাদের মধ্যে কোনো প্রকার জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা নেই। দেশের চলমান সংকট নিরসনে আলোচনার মাধ্যমে সবদলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনই একমাত্র পথ বলে তারা মনে করছেন।