বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে চাঁদাবাজদের হামলায় গাড়ি মালিক কামরুলসহ ২ জন আহত হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মাহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীবাহঅ বাস থেকে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদ করায় থানা পুলিশের উপস্থিতিতে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় শ্রমিকলীগ নামধারী সন্ত্রাসী জুলহাস উদ্দিন লিটন ও সেলিম খান বাহিনী এ হামলা চালায়। এসময় একটি পরিবহনের টিকিটকাউন্টার ভাংচুর করেছে চাঁদাবাজরা।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগ সভাপতি আবদুস ছামাদ বেপারীর নিয়োজিত চাঁদাবাজরা। ছামাদের লোকজনকে হঠিয়ে নাসিক ৩ ওয়ার্ড শ্রমিকলীগ সভাপতি সেলিম খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুলহাস উদ্দিন লিটনবাহী প্রতি গাড়ি থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করার জন্য শনিবার সকালে মাঠে নামে। চাঁদা দেওয়া না দেওয়া নিয়ে সকাল ৯ টার দিকে আবদুস ছামাদ বেপারীর নিয়োজিত মুক্তিনগরের কবির হোসেনের সাথে লিটনবাহিনীর কথা কাটা কাটি ও ঠেলা ধাক্কার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দেখা দেয় উত্তেজনা। অপরদিকে সড়ক পরিবহন ও মালিক সমিতির পক্ষ থেকে শিমরাইল মোড়ের চাঁদা বাজি বন্ধ করার জন্য নব গঠিত একটি কমিটির লোকজন ছামাদ বেপারীর নিয়োজিত ২ জন চাঁদা আদায়কারীকে হাতে নাতে ধরে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে বেলা ১১ টায়। এ খবর পেয়ে ছামাদ বাহিনীর ১৫/১৬ জন চাঁদাবাজ একত্র হয়ে চাঁদা আদায়কারী ২ জনকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নেয়। তারা প্রশাসন ও গাড়ি মালিকদের অনুমতি সাপেক্ষে বৈধ ভাবে চাঁদা আদায় করছে দাবি করে পুলিশের সাথে তর্কে জড়ায়। এসময় যারা চাঁদা আদায়কারীদের ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে তাদের উপর হামলা চালায় চাঁদাবাজরা। পুলিশের সামনেই কামরুলসহ ২ জনকে মারধর করে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়া স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের কঠোরতার কারণে বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়নি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া শিমরাইল মোড়ে ছুটে যান। তিনি বিষয়টি দেখার জন্য চাঁন সপুার মার্কেটের ৪ চার তলায় থানা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক তাজিম বাবুর ব্যক্তিগত অফিসে তাৎক্ষনিক বৈঠক বসেন। এক পক্ষ ইয়াছিন মিয়ার ডাকে সারা দিয়ে বৈঠকে হাজির হওয়ার পর লিটন বাহিনী লাঠি সোটা নিয়ে খানকায়ে জামে মসজিদ সংলগ্ন কবিরের মালিকানাধিন টিকিট কাউন্টার ভাংচুর করে। তখন ইয়াছিন মিয়ার খবর পেয়ে আবদুস ছামাদ বেপারী বৈঠকে হাজির হয়। কিছুক্ষণ আলোচনার পর বৈঠক শেষ হলে জানা গেছে,বিষয়টি মিট মিমাংশা হয়ে গেছে। কি ভাবে মিমাংশা হয়েছে তা জানায়নি কোন পক্ষ। তবে এ টুকু জানা গেছে,বিএনপি নেতা আজিবপুরের আবদুল কাইয়ুমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু,পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়ার জন্য।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই আকিকুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, পরিবহন মালিকরা ২ জন চাঁদা আদায়কারী ধরে পুলিশের কাছে তুলে দিয়ে ছিল। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য কেহ বাদী হতে চায়নি। যারা ধরে দিয়েছে তাদের মধ্য থেকে কেহ বাদী হয়ে মামলা করার জন্য কথা বলা হচ্ছে এমন সময় কয়েকজন নেতা এসে প্রতিবাদ জানায় তারা চাঁদাবাজ নয়। পরিবহন মালিক সমিতির অনুমতি সাপেক্ষে ৫০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। তারা পরিবহন সমিতির নিয়োজিত লোক এমন পরিচয়পত্রও দেখায়। তখন তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় দুপক্ষের মধ্যে কিছু উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে তা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করে পরিস্থিতি স্বাভাকিব করা হয়। এ ব্যাপারে কারো কোন অভিযোগ না থাকায় কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। তবে যদি কেহ কোন অভিযোগ করে তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে,চাঁদাবাজির টাকা ভাগা ভাগির মাধ্যমে সমঝোতা হয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,শ্রমিকলীগ নামধারী সেলিম খান ও লিটন বাহিনী এর আগেও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিষয়ে ৩ জনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। এ বাহিনীর মারধরে পঙ্গু হয়েছে আরিফ ও আসলাম নামে দু,জন। হামলাকারী লিটন বাহিনীর বিরুদ্ধে আরিফ ও আসলামের পক্ষ থেকে থানায় মামলাও করেছে। মামলা হওয়াও পর কিছুদিন পালিয়ে থেকে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরছে লিটন বাহিনী।