বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
মাদকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে যেয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন পাঠানটুলী এলাকার স্বনামধন্য সামাজিক সংগঠন মানব কল্যাণ পরিষদ এর চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ সিটি প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য সাংবাদিক আব্দুল মান্নান ভুইয়া এখন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন শহরের খানপুরস্থ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে।
এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ১৮ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় পাঠানটুলী কবরস্থান রোড এলাকায় সাংবাদিক আব্দুল মান্নান ভুইয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শাহজাহান, দেলু এবং শহীদুল্লাহ্’র নেতৃত্বে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী। ঐ দুবৃত্তরা সাংবাদিক মান্নানকে প্রথমে গলা কাটতে চেষ্টা করে এবং পরে বুকের ডানপাশে পেটের উপরিভাগে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে। আহত ও রক্তাক্তবস্থায় মান্নান ভুইয়া দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে সন্ত্রাসী’রা তাকে লক্ষ্যভ্রষ্টভাবে পরপর ৩টি গুলি করে। যার একটি বাম হাতের কব্জি ঁেঘষে বেড়িয়ে যায় কিন্তু ছুরিকাঘাতে গলার একটু উপরে চিবুকে, বাম গালে এবং পেটে গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয় সাংবাদিক আব্দুল মান্নান ভুইয়া।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ ৩০০শয্যা হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, দুবৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সাংবাদিক মান্নান ভুইয়ার অবস্থা অত্যন্ত আশংকাজনক ছিল। তবে আমি রেফার্ড করার পর দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছাতে পেরেছেন বলে শংকামুক্ত হয়েছেন তিনি।
এলাকাবাসী আরও জানান, সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতাদের কাছের লোক পরিচয়ে এলাকায় মাদকের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে স্থানীয় শাহজাহান, দেলু ও শহীদুল্লাহ্র নেতৃত্বাধীন একটি বৃহত্তর মাদক ব্যবসায়ী চক্র। আর এ মানব কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান সাংবাদিক আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া মাদকের বিরুদ্ধে পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা সহ মাদক বিরোধী সভা, র্যালী করার পর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় উল্লেখিত ঐ মাদক ও সন্ত্রাসী চক্রের সদস্যরা। আর এর জের ধরে মান্নান ভুঁইয়ার আজকের এই পরিণতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মানান ভুইয়াকে করা গুলি’র শব্দে এলাকাবাসী এগিয়ে আসতে থাকলে হামলাকারীরা বোমা ফাঁটিয়ে উপস্থিত জনতার সামনে দিয়ে বীরদর্পে পালিয়ে গেছে।
আহত মান্নান এবং ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, মান্নানকে গুলি করেছে চিহ্নিত খুনী সন্ত্রাসী মাষ্টার দেলু এবং ছুরিকাঘাত করেছে স্থানীয় শাহজাহান ড্রাইভারের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ছেলে দেলোয়ার হোসেন দেলু। আর এ সময় ঘটনায় সহযোগীতায় ছিল মূল পরিকল্পনাকারী আব্দুল হকের ছেলে শহীদুল্লাহ, যে ঘটনার ঘন্টাখানেক আগে হিমেলের মোবাইলে মান্নানকে ডেকে পাঠিয়েছিল। কিন্তু মান্নান তার ডাকে সাড়া দেয়নি। যে কারনে এ ঘটনা ঘটায়। এ সময় এ ঘটনায় অংশগ্রহণ করে মৃত আজীজুর রহমানের ছেলে শাহজাহান, মোস্তান ওরফে হাসানের ছেলে সাইদুল, চাঁন মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান সেন্টু, খোরশেদ ভান্ডারী’র ছেলে হিমেল, কানা সামাদের ছেলে বাদশা, শাহজাহানের ছেলে চঞ্চল, মনু ড্রাইভারের ছেলে জামান, ইসমাঈলের ছেলে ইয়াছিন, জানে আলমের ছেলে ইশতি প্রমূখ।
এদিকে আহত আব্দুল মান্নান ভুঁইয়াকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সফল অস্ত্রপচারের পর নারায়ণগঞ্জ ৩০০শয্যা হাসপাতালে ফিরিয়ে আনার পর জেলা পুলিশ সুপার মঈনূল হক, এডিশনাল এসপি মতিউর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শরাফতউল্লাহ্সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক,সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মান্নান ভুঁইয়াকে দেখতে হাসপাতালে আসেন।
এ সময় এসপি মঈনূল হক বলেন, এ ঘটনায় জড়িতরা যত প্রভাবশালীই হোক, যে কোন দলেরই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।