বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
চলতি মৌসুমে ফুরিয়ে আসছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুস্বাদু নানান জাতের আম। শেষ হতে চলেছে পাকা আম ঘিরে মাস চারেকের বিশাল কর্মযজ্ঞও।
আমের মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হয়ে ওঠে। প্রান্তিক আম চাষি থেকে বেকার যুবক কারোরই ফুরসৎ থাকে না। গতবার আম শেষ হয়ে গিয়েছিলো বর্ষার আগেই। কিন্তু এবার ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে এখনও শোভা পাচ্ছে আম। তবে দাম বেশি হওয়ায় দোকানে ক্রেতা কম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বাজার থেকে এরই মধ্যে গোপালভোগ, মোহনভোগ, কালিভোগ, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর বিদায় নিয়েছে। এখন বাজারে অল্প সংখ্যক ফজলি আর আশ্বিনা আম মিলছে।
জেলার একজন ফল বিক্রেতা শফিকুল জানান, সরবরাহ কমে গেছে। মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। যা ফজলি আছে আগামী সপ্তাহে হয়তো আর পাওয়া যাবে না। তবে আশ্বিনা আম আরও দু’সপ্তাহ থাকবে। এর মধ্যে স্বাদে মিষ্টি ফজলি। তবে দামও বেশি। আর আশ্বিনা টক। দামও কম।
তিনি বলেন, ফজলি আট হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। আর আশ্বিনা বিক্রি হয়েছে তিন হাজার ২শ’ টাকা মণ দরে। তবে দু’দিনের মধ্যে এ দাম আরও বাড়বে।
আমান ফল আড়তের মালিক আমানুল হক বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই আড়তগুলোতে আমের আমদানি কমে এসেছে। আম ঘিরে কমে যাচ্ছে সেই নির্ঘুম ব্যস্ততা। নেই তেমন বিক্রি-বাট্টা। সেই সঙ্গে বেড়ে গেছে দামও। তাই স্থানীয় ক্রেতারা আমের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
যারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাস টার্মিনাল হয়ে ঢাকা যাচ্ছেন তারাই স্বজনদের জন্য শখ করে শেষ মুহূর্তের আম নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকের ছেলে-মেয়ে ঢাকা থাকায় তাদের জন্য আম পাঠাচ্ছেন। কুরিয়ার সার্ভিস ও অন্য পরিবহনের মাধ্যমে রাজশাহী থেকে দেশের দূর-দূরান্তে আম পাঠানোও কমে গেছে।
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা খালেকুজ্জামান জানান, আগের মতো এখন আর ব্যস্ততা নেই। গ্রাহকদের আম পাঠানো একেবারেই কমে গেছে। ভরা মৌসুমের তুলনায় এখন পাঁচভাগ আমও বুকিং হচ্ছে না।
বেঁধে দেওয়া সময়ানুযায়ী এবছর ২৫ মে থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম ভাঙা শুরু হয়। এই নিয়মে ক্ষিরসাপাত ও লক্ষণভোগ আম ভাঙা হয় ১ জুন, ল্যাংড়া ও বোম্বাই ১০ জুন, ফজলি ২৫ জুন। এছাড়া আম্রপালি ১ জুলাই এবং আশ্বিনা ১৫ জুলাই ভাঙা হয়।
জেলার একজন কৃষি কর্মকর্তা জানান, ১৬ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। গতবারের উৎপাদনের সমপরিমাণ ধরে এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছিলো ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৭৯ মেট্রিক টন।